Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ জয়নুল আবেদীন


প্রকাশিত: ০২:২৯, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ০৩:১০, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

প্রবন্ধ

জান্নাতুল বাকী ও প্রসঙ্গান্তর

জান্নাতুল বাকী ও প্রসঙ্গান্তর
ছবি: সবার দেশ

(৬ষ্ঠ পর্ব)

হযরত উমর (রা.) সম্পর্কে ইতিহাস লেখকগণ বলেন- হযরত উমর (রা.) ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে বিদ্বান ও বাগ্মী হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তিনি কুরআন ও হাদিসে অসাধারণ পান্ডিত্য অর্জন করেন। প্রায় ১০০০ ফেকাহ সংক্রান্ত মলা সম্পর্কে তিনি যা বলেছেন, পরবর্তী ফকিহগণ তা সমর্থন করেছেন। তাঁর কর্মদক্ষতা ও বহুমুখী প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে স্বয়ং মহানবী (স.) একদা বলেছিলেন যে, তাঁর পর কেউ নবী হলে তা ছিল একমাত্র উমরেরই প্রাপ্য। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক হিট্টি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে মুসলিম কিংবদন্তীতে প্রাথমিক যুগের ইসলামের ইতিহাসে তাঁকে হযরত মুহম্মদের (স.) পরেই সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ বলা হয়েছে। তিনি মুসলমান লেখকদের দ্বারা তাঁর দান, বিচার এবং অসামান্য সরলতার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। তাঁদের মতে, একজন খলিফার যে সমস্ত গুণ থাকা প্রয়োজন সেগুলো ওমরের মধ্যে ছিল। তাঁর নিষ্কলঙ্ক চরিত্র সমস্ত ধর্মভীরু উত্তরাধিকারীর জন্য ছিল আদর্শ।’

- ইতিহাসের সাথে আমিও একমত। তারপরেও চিতি সাহেবের নিচের বক্তব্যের সাথে একমত না হয়ে পারছি না। চিতি সাহেব তাঁর গ্রন্থের একাংশে বলেন, ‘ইসলাম অন্ধ, অনুমানের ধর্ম নয়, পায়জামা, জুব্বা, ধর্ম নয়। পায়জামা, জুব্বা জাতীয় পোশাক ইসলামের পোশাক বলে ঘোষণা তসবির করেছে বেদুঈন সরদার ইবনে সউদ; যে সউদ ‘জাজিরাতুল’ আরবের নাম পরিবর্তন করে নিজের গোষ্ঠীর নাম যুক্ত করে রেখেছে ‘সউদী আরব’!’

একদিকে বিশ্বের বিস্ময়কর স্থাপত্যকর্ম কা'বা মসজিদ, মসজিদে নব্বীর ঈর্ষাতুর শিল্পকর্ম ও মায়াবী আলোক সজ্জায় বিস্মিত যিয়ারতকারীদের বিস্ময়ের ঘোরের মধ্যে রেখে অপর দিকে নির্দ্বিধায় রাস্তাঘাট, যানবাহন, স্থাপত্যকর্মসহ দেশের নামটিও বদলে গিয়েছে। শিরক দূর করার নামে- দেশের শিক্ষার কারুকলাম পরিবর্তনসহ মুছে ফেলা শুরু হয়েছে শেষ নবী (স.)-এর উত্তরাধিকারদের শেষ চিহ্নটুকুও। জমজমটি কোথায় ছিল? কেমন ছিল? দেখার সুযোগ নেই। নিরাপত্তাসহ ব্যবহারের সুবিধার্থে এখন মক্কায় পবিত্র জমজম দেখার পরিবর্তে দেখা হয় আধুনিক প্রযুক্তি নির্মিত জমজমের পানি বাহিত ট্যাপ বা পানির কল। মদিনায় নবী করিম (স.)-এর সমাধি যিয়ারত করতে গিয়ে এখন দেখা যাবে তিন তিনটি পিতলের চাক্তি। ছিদ্র যুক্ত পিতলের চাকৃতির ঐ পাশে কি রয়েছে তা সাধারণভাবে দেখা বা বুঝার সুযোগ নেই কারো। জান্নাতুল বাকী ও জাবালে উহুদে মা ফাতিমা (রা.) ও মহাবীর হামজা (রা.)-এর সমাধি যিয়ারত করতে গিয়ে যিয়ারত করা হয় চূর্ণবিচূর্ণ পাথর ও তপ্তমরুর বালি আর বালি। কারণ, চৌদ্দশ বছর আগে আরবের সত্যবাদী যে বালকটির হাতে স্থাপিত হয়েছিল 'জাজিরাতুল আরব' এখন সে ‘জাজিরাতুল আরব' আর নেই- আছে নবী করীম (স.)-এর রক্ত ও গোত্র বহির্ভূত পরাক্রমশালী বাদশা আবদুল আজিজ সাউদের ‘সউদী আরব'।

পরবর্তী শাসনামলে ফাতেমিয় পরিবার কারবালার নির্মম হত্যাকাÐের প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো বিচার না পেয়ে পরবর্তী শাসকদের উপর সংক্ষুব্ধ ছিল। এ কারণে পরবর্তী শাসকগণও সর্বদা ফাতেমিয় পরিবারকে প্রতিপক্ষ মনে করে নানাভাবে দাবিয়ে রাখতো।

ফাতেমী পরিবার সম্পর্কে নবী করিম (স.)-এর উপরে বর্ণিত উক্তি ও কালে কালে নির্যাতনের বিষয় ইতিহাস স্বীকৃত। এটাও স্বীকৃত যে, খিলাফত আমলের পর থেকে যখন যারা ক্ষমতায় এসেছে তখন তারা ফাতেমী পরিবারকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করতেছে। চলন বাঁকা' নীতির কারণে ফাতেমী পরিবারের ইতিবাচক দিকগুলো আঁড়ালে রেখে শুধু নেতিবাচক দিকগুলো প্রচার করতো। শুধু তাই নয়, ক্ষমতাসীনগণ নিজেদের পক্ষে জনমত ঠিক রাখার জন্য ফাতেমীদের নামে মিথ্যা কুৎসা ও অপবাদ প্রচারসহ এক শ্রেণীর আলেম দিয়ে তাদের মনের মতো হাদিস-দলিল সৃজন করে সৃজিত হাদিস সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। কারবালার মর্মান্তিক হত্যাকাÐের পর ফাতেমী পরিবার হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করে বিচার না পেয়ে একই কারণে ক্ষমতাসীন দলের ইতিবাচক দিকগুলো না দেখে শুধু নেতিবাচক দিকগুলো আমলে নিতে শুরু করে। আর সে কারণেই উভয় স¤প্রদায় পরস্পর পরস্পরের উপর চরম অবিশ্বাস ও বিদ্বেষপ্রবণ হয়ে ওঠে। 

চরম অবিশ্বাস ও বিদ্বেষপ্রবণার কারণেই নির্বিচারভাবে এক পক্ষের ধর্মপদ্ধতি থেকেও অপর পক্ষ দূরে সরে যেতে থাকে। ফলে ধর্মের বেশকিছু সঠিক আকার-আকৃতি উভয় পক্ষের কাছে বেঠিক ও বিকার-বিকৃতি লাভ করতে থাকে। বেঠিক ও বিকার- বিকৃতির ফলে অঙ্কুরিত হতে শুরু করে ডজন ডজন মতভেদ। হাজার বছরের বর্ষপরিক্রমায় একে একে ক্ষমতাসীনদের মুখোস খসে পড়তে শুরু করলে সাধারণ মুসলমানগণ রাষ্ট্র ও গোত্রের পরস্পর বিপরীত রাষ্ট্রীয় ও গোত্রীয় ইসলামের ভেতর থেকে মুহাম্মদী ইসলামকে খুঁজতে শুরু করে। রাষ্ট্রীয় ও গোত্রীয় ইসলাম থেকে মুহাম্মদী ইসলামে ফিরে যাওয়ার জন্য মানুষের ব্যাকুলতা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। লক্ষ লক্ষ জাল হাদিস বের হতে শুরু করলে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ছট্‌ফট্ করা ব্যাকুলতা ও প্রচন্ড তৃষ্ণা যখন ক্ষমতাশীনদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ঘৃণাসহ বিতৃষ্ণার আকার ধারণ করছিল ঠিক তখনই আবদুল ওয়াহাব তাঁর ওয়াহাবী পানীয় ‘শরাবন তহুরা’ বলে পেয়ালাসহ সামনে এসে হাজির হয়। কেউ ইচ্ছায় কেউ অনিচ্ছায় ওয়াহাবী পানীয় ‘শরাবন তহুরা’ ভেবে পান করতে শুরু করে। ওয়াহাবী পানীয় স্বর্গীয় ‘শরাবন তহুরা' কিংবা শরাবখানার ‘নেশার সুরাহী' তা এ মুহূর্তে বলতে না পারলেও এইটুকু বলতে পারি- আধুনিক খাদ্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ের স্বার্থে খাদ্যে মিশ্রিত ফর্মালিন যেভাবে খাদ্যের সাথে প্রাণীদেহে প্রবেশ করে প্রাণীর জীবনীশক্তি আস্তে আস্তে ক্ষয় করে দেয় মধ্যযুগের ধর্ম ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ের স্বার্থে ধর্মে মিশ্রিত ওয়াহাবী ফর্মালিনও ঠিক সেভাবে আমাদের ধর্মের প্রধান সঞ্জীবনীশক্তি নবী করিম (স.)সহ তাঁর সাহবীবর্গ, পীর-আউলিয়া এবং অলী এ-কামেলদের আস্তে আস্তে ক্ষয় করতে শুরু করে দিয়েছে।

জান্নাতুল বাকীতে জগৎ মাতা ফাতিমা (রা.)-এর সমাধির কথা শোনার পরপরই মনে পড়ে গেল- ওয়াহাবী আন্দোলনের কথা। যে আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীরা অপরাপর কবরসহ ফাতিমা (রা.)-এর কবরটিও ভেঙে ফেলেছিল। তারা ইসলাম থেকে শিরক-বিদাত দূর করার নামে জান্নাতুল বাকীর সব কবরের চিহ্নও নির্মূল করে ফেলে। এ বিষয়ে আমার ‘দিল্লি-আগ্রা ও আজমির' গ্রন্থের ৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে। ‘দিল্লি-আগ্রা ও আজমির’ গ্রন্থে এ বিষয়ে লেখার সময় যেসব মূলগ্রন্থ অনুসরণ করেছি সেসব গ্রন্থ পাঠ করার সময়ও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, ইসলামের কোনো প্রজ্ঞার উপর ভিত্তি করে মক্কায় জান্নাতুল মুয়াল্লায় মুসলিম জাহানের প্রথম মুসলমান বিবি খাদিজা (রা.) এবং জান্নাতুল বাকীতে জগৎ মাতা নবী নন্দিনী ফাতিমা (রা.)সহ আহলে বাইয়েতের সকল সমাধি দলিত-মথিত ও চূর্ণবিচূর্ণের দ্বারা নিশ্চিহ্ন করে ধূলির সাথে মিশিয়ে দিতে পারে।

ইসলাম থেকে শুদ্ধাচারের নামে শিরক দূর করতে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে এসব করা হয়েছে কিনা তার উত্তর এ মুহূর্তে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, ইতিহাস বড় নির্মম। প্রাক ড্রাগন-এর মহাজঠর যেভাবে হাতিয়ারসহ শিকারীকে হজম করে ফেলে ঠিক সেভাবে মহাকালের ইতিহাসের মহাজঠরও সবকিছু হজম করে ফেলতে পারে। রিমোট কন্ট্রোলে সবকিছু বশে আনা গেলেও ইতিহাস কারো বশে আসে না। হাজার বছর পরে হলেও সঠিক উত্তরটি ইতিহাস ঠিকই বলে দেয়। যেদিন প্রমাণিত হবে মাথাব্যথার কারণে মুন্ডু কেটে ফেলা ঠিক হয়নি- সেদিন কিন্তু কর্তিত মুন্ডুটি ধড়ে লাগালেও দেহে আর প্রাণ ফিরে আসবে না। আমার ধারণা, সিজদা থেকে বিরত রাখার জন্য কবরের চিহ্ন ভাংচুর না করে বিকল্প কিছু একটা চিন্তা করতে পারতো। সূত্র মতে, আরবের বাইরে যেসব দেশে পীর-আউলিয়াগণের সমাধি রয়েছে এবং প্রতি বছর সমাধির পাশে মহাসমারোহে পীর-আউলিয়াদের জন্ম বার্ষিকী ও মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা হয় তাদের অবস্থা কী হবে?

যা করা হয়েছে সরকারের নির্দেশ ও সমর্থনেই করা হয়েছে। এ দেশ রাজতন্ত্রের দেশ। রাজতন্ত্র অর্থ রাজার ইচ্ছায় বা অধীনে শাসন পদ্ধতি। অন্যান্য সম্পদ ও সম্পত্তির মতো রাষ্ট্রও রাজার কাছে এক প্রকারের সম্পত্তি। সম্পত্তি অর্জন করতে হলে যেমন অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয় তেমন রাষ্ট্র অর্জন করতে হলে শ্রম-সাহসসহ প্রচুর রক্ত ব্যয় করতে হয়। এ দেশে ওয়াহাবী মতবাদসহ সউদী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে কম-বেশি শতবর্ষ সময় ব্যয় হয়েছে এবং কোটি কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্টসহ লক্ষাধিক লোক শহীদ, গাজী কিংবা কোতল হয়েছে। এতোবড় ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত রাষ্ট্রে রাষ্ট্র এবং নিজের নিরাপত্তার জন্য সরকার যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। বলে যে কোনো দেশের ভিসাও দেশের নিরাপত্তা বিপন্নের কথা (প্রবেশাধিকার) বন্ধ করে দিতে পারে।

তারা তা করবে না। কারণ, ধনবান মুসলমানদের জন্য হজ্জব্রত পালন করা ফরজ। হজ্জব্রত এমনই একটি ফরজ যা পালন করার সাথে মসজিদুল হারাম বা আল্লাহর ঘর (কাবা) যিয়ারত বা দর্শনের আবশ্যকতা রয়েছে। সউদী আরব প্রবেশ ছাড়া কা'বা ঘর যিয়ারত সম্ভব নয়। সউদী প্রবেশ অর্থাৎ কা'বা ঘর যিয়ারত বন্ধ করতে গেলে লক্ষ লক্ষ লোক আল্লাহর নির্দেশিত ফরজ থেকে বঞ্চিত হবে। ওয়াহাবীগণ প্রথমে ইসলামি ব্যবস্থা থেকে ইজমা ও কিয়াস বর্জন করেছিল। এখন সুন্নত নামায আদায় করতেও খুব একটা দেখা যায় না। আল্লাহর নির্দেশিত ফরজ আদায় থেকে কাউকে বঞ্চিত করলে তাদের আদর্শের মূল বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়ে প্রকৃত উদ্দেশ্য বের হয়ে পড়বে। তারা তা না করার আরো কারণ আছে। তা হলো, বোখারী শরীফের ৮২৬ নং হাদীছে পবিত্র কালামের পারা ১৭ রুকু ৩ এর উদ্ধৃতি করে কা’বাগৃহ সকল মুসলমানের জন্য উন্মুক্ত মর্মে বলা হয়েছে, ‘যারা কুফরী করে, আমার দ্বীনের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং মসজিদে হারামের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যে মসজিদে আমি প্রত্যেকের সমান অধিকার দিয়েছি, নিকটবর্তী বাসিন্দা হোক কিংবা দূরপ্রান্তের বাসিন্দা হোক। মনে রেখো, তাকে (প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীকে) আমি কষ্ট দায়ক আযাব ভোগ করতে বাধ্য করবো। 

পবিত্র কোরআনুল কারীমের উল্লেখিত আদেশ যখন লঙ্গন করে তখন কারো বুঝতে বাকি থাকবে না যে মুহাম্মদ ইবনে আবদিল ওয়াহহাব ওরফে আবদুল ওয়াহাব ইসলাম ধর্মকে কি করতে চেয়েছিলেন। কারণ তারা এখনই প্রেম-প্রীতি ও শ্রদ্ধা-ভালবাসাহীন অবস্থায় দায়সাড়াভাবে ফরজ আদায় করে ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করে চলছে। ফরজ (হজ্জ) আদায়ে বাঁধা সৃষ্টি করলে ধর্মীয় দিক ছাড়াও আর্থিক দিক দিয়ে বাধাপ্রাপ্তদের চেয়ে বাধাদানকারীর ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে।
- কি রকম?
- লাঙ্গল আর ফলার সম্পর্কের মতো। লাঙ্গলের মুখে ফলা আছে বলেই লাঙ্গলের সম্মান ও মূল্য আছে। লাঙ্গলের মুখ থেকে যেদিন ফলা খসে পড়বে সেদিন লাঙ্গলও সবকিছু হারিয়ে জ্বালানি কাঠে পরিণত হবে।

- কথায় বলে ‘যাকে দেখতে নারি (না পারি) তার চলন বাঁকা'। আপনার এ মানসিকতার কারণে সউদী সরকারের রীতি-নীতি ও নজদিদের কোনো গুণই আপনার চোখে পড়ে না। তা ছাড়া তাদের নীতি আমাদের দেশের বিশিষ্ট ওলামা-এলেমগণও সমর্থন করছেন। আমাদের দেশের বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ মৌলানা মনিরুজ্জামান এসলামাবাদী তাঁর ‘এসলাম জগতের অভ্যুত্থান' গ্রন্থে নজদিদের সার্টিফাই করে বলেছেন-
‘বর্তমান যুগে পৃথিবীতে এছলাম ধর্মনীতির খুব নিকটবর্তী যদি কোনো দল থাকে তাহা নজদিরা। ইহাদের চালচলন, ধর্ম বিশ্বাস অনেকটা এছলামি প্রাথমিক যুগের মোছলমানগণের অনুরূপ। ইহাদের মধ্যে শেক, বেদআৎ আদৌ নেই। তাহারা নামাজ, রোজা ইত্যাদি ধর্মকর্মের পুরোপুরি পাবন্দ। তাদের প্রদেশে কোনো প্রকার মাদক দ্রব্যের ব্যবহার আদৌ নেই। শরাব, তাড়ি, আফিম, ভাঙ, সিদ্ধি, তামাক, চরুট, সিগারেট ইত্যাদি একটি প্রাণীও ব্যবহার করে না। চা পান করিলে তাহাতেও সামান্য নেশার ভাব আসতে পারে মনে করিয়া চা, কফি পর্যন্ত তাহারা পান করে না। ইহারা নিতান্ত মত্তকি পরহেজগার। দুঃখের বিষয়, শিক্ষাক্ষেত্রে অত্যন্ত পশ্চাৎপদ। দুনিয়ার বড় একটা খোঁজ-খবর রাখে না। গোঁড়ামিতেও চূড়ান্ত।’ (চলবে,,,)

লেখক: আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক

সবার দেশ/কেএম