কাঠগড়ায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মেননকে ইনু
‘দিন আমাদেরও আসবে’

ক্ষমতা হারানোর পর একে একে রিমান্ড ও গ্রেফতারে মুখোমুখি হয়েছেন জাসদের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালতের কাঠগড়ায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুজনেই শুনানিতে অংশ নেন—প্রতীক হয়ে থাকলো একটি সংক্ষিপ্ত সংলাপ।
আদালতের কাঠগড়ায় এক পর্যায়ে হাসিমুখে ইনু মেননকে বলেন, ‘দিন আমাদেরও আসবে।’ কথাটি শুনে সাড়া না দিয়ে মুচকি হেসে থাকেন ৮৩ বছর বয়সী মেনন।
আওয়ামী লীগের সহযোগী দুই দলের শীর্ষ এ নেতাদেরকে সরকার পতনের পর একাধিক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবারের শুনানিতে তাদের সঙ্গে আরও কিছু সাবেক মন্ত্রী ও এমপিকেও আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি চলাকালীন হাস্যোজ্জ্বল ও স্বাভাবিক ভাবেই ছিলেন ইনু ও মেনন। কখনও সহানুভূতির ভঙ্গিতে, কখনও রসিকতায়, আবার কখনো কাঠিন্য ফুটে উঠছিল মুখে।
শুনানির এক পর্যায়ে ইনুর এ সংক্ষিপ্ত মন্তব্য যেন রাজনীতির গভীর একটি বার্তা টেনে দেয়—‘দিন আমাদেরও আসবে’—এ যেন ইতিহাসের ঘুরপথে প্রত্যাবর্তনের অঙ্গীকার।
শুনানির সময় আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সময় মেনন বলেন, কালকে হয়তো আমাকে হাসপাতালে তুলতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তার আইনজীবী তানভীর বলেন, উনি অসুস্থ। বয়স ৮৩। কাল হয়তো চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
শুনানি শেষে আদালত ইনু ও মেননের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর কড়া নিরাপত্তায় আবার হাজতখানায় পাঠানো হয় দুই প্রবীণ নেতাকে।
এক সময়ের চিরচেনা তথাকথিত‘গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’ হয়ে থাকা ইনু ও মেনন—যারা নিজেই একসময় বিরোধীদের গ্রেফতারে যুক্ত ছিলেন, আজ তারাই দাঁড়িয়ে আছেন কাঠগড়ায়। সময়ের এ নির্মম মোড় রাজনৈতিক চিত্রপটের ঘূর্ণাবর্তে নতুন করে প্রশ্ন তোলে: ক্ষমতা কি চিরস্থায়ী? নাকি সময়ই শেষ সত্য? ইনুর এ মন্তব্য কি ইতিহাসের ঘুরপথে প্রত্যাবর্তনের অঙ্গীকার- না-কি শুধুই নিজেকে শান্তনা দিয়ে বেঁচে থাকার প্রয়াস।
সবার দেশ/এমকেজে