Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৬:৫৭, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ

‘পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানে হামলার আগে শত্রুরা দশবার ভাববে’

‘পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানে হামলার আগে শত্রুরা দশবার ভাববে’
ফাইল ছবি

কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হFJলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, পাকিস্তান একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, এবং এর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী যে কোনও শত্রু এখানে হামলার আগে ‘দশবার ভাববে’।

২৯ এপ্রিল ২০২৫-এ এক অনুষ্ঠানে মরিয়ম বলেন, পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা থাকলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের সেনাবাহিনী দেশের প্রতিরক্ষায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর, এবং শত্রুরাও এটি জানে। তিনি রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে বহিরাগত হামলার সময় সেনাবাহিনীর পাশে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। মরিয়ম আরও দাবি করেন, তার পিতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ১৯৯৮ সালে পারমাণবিক পরীক্ষার মাধ্যমে পাকিস্তানকে এ শক্তির অধিকারী করেছেন।

পেহেলগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত, ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল, এবং ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তানও ভারতীয় ফ্লাইটের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং শিমলা চুক্তি স্থগিতের হুমকি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারত আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক হামলা চালাতে পারে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে ফোনালাপে বলেছেন, ভারতের যেকোনও আগ্রাসনের পূর্ণ শক্তি দিয়ে জবাব দেয়া হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সতর্ক করে বলেছেন, দেশের অস্তিত্বের উপর সরাসরি হুমকির মুখে পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে দ্বিধা করবে না।

পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে প্রায় ১৭০টি ওয়ারহেড রয়েছে, যেখানে ভারতের রয়েছে প্রায় ১৭২টি। পাকিস্তানের ‘ফুল স্পেকট্রাম ডিটারেন্স’ নীতি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের উপর জোর দেয়, যা ভারতের ‘কোল্ড স্টার্ট’ নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পাকিস্তানের পারমাণবিক রক্ষণাবেক্ষণে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেখানে ভারত ২০২৫-২৬ সালে প্রতিরক্ষায় ৭৯ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে, পাকিস্তানের ৮ বিলিয়ন ডলারের তুলনায়।

এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জাতিসংঘ মহাসচিবকে ফোন করে কড়া বার্তা দেন—যদি ভারত আগ্রাসন চালায়, তাহলে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি দিয়ে তার জবাব দেবে।

এ উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ভারত সত্যিই সামরিক হামলা চালায়, তবে নিজেদের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পথও বেছে নিতে পারে। 

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে। চীন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে হামলার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছে। সৌদি আরবও উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা জরুরি।

তথ্যসূত্র : দ্য ডন, রয়টার্স, এনডিটিভি, জেরুজালেম পোস্ট, এক্স পোস্ট। 

সবার দেশ/কেএম