Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:০০, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

রহস্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতা

সিরিয়ায় হাফিজ আল-আসাদের সমাধি থেকে লাশ চুরি

সিরিয়ায় হাফিজ আল-আসাদের সমাধি থেকে লাশ চুরি
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদের সমাধি থেকে তার লাশ চুরির ঘটনা দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। 

স্থানীয় গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ সকালে লাতাকিয়া প্রদেশের কারদাহায় অবস্থিত হাফিজের পারিবারিক সমাধিস্থল ভেঙে তার লাশ চুরি হয়েছে। এ ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একাধিক পোস্টে কবর ভাঙচুর ও লাশ চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

কারদাহা, আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রধান অঞ্চল লাতাকিয়ায় অবস্থিত, যেখানে হাফিজ আল-আসাদের সমাধি ছিলো। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) জানিয়েছে, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা সমাধিস্থলটি খনন করে হাফিজের দেহাবশেষ নিয়ে গেছে। ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, সমাধিস্থলে আগুন ধরানো হয়েছে এবং কবরের চারপাশে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীরা সমাধিটিতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়েছিলো, যার ফলে এটি আংশিকভাবে ধ্বংস হয়। এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক এ ঘটনায় লাশ পুরোপুরি অপসারিত হয়েছে।

হাফিজ আল-আসাদ ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার মৃত্যুর পর পুত্র বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় আসেন। ২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রভাবে বাশারবিরোধী বিক্ষোভ গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। ২০১৫ সালে রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপ বাশারের শাসন বাঁচালেও, ২০২৪ সালে হাইআত তাহরির আল-শাম (HTS) ও তুর্কি-সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মির আক্রমণে বাশারের শাসন ধসে পড়ে। ৮ ডিসেম্বর ২০২৪-এ দামেস্কের পতনের পর বাশার রাশিয়ায় পালিয়ে যান।

এ ঘটনা সিরিয়ার গভীর ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিভাজনকে প্রকাশ করে। আল-আসাদ পরিবারের শাসন, যা আলাউইত সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভরশীল ছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি জনগোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সমাধি ভাঙচুর ও লাশ চুরি আসাদ শাসনের প্রতি জনগণের ক্রোধ এবং বিদ্রোহীদের ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রতীক। এটি সিরিয়ার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে আলাউইত ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে।

লাশ চুরির পেছনে কারা জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিদ্রোহী গোষ্ঠী, স্থানীয় বাসিন্দা, বা অন্য কোনো পক্ষ এর জন্য দায়ী হতে পারে। সিরিয়ার বর্তমান অরাজক পরিস্থিতিতে তদন্তের সম্ভাবনা কম, তবে এ ঘটনা দেশটির নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থার দুর্বলতাকে উন্মোচিত করেছে।

সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট, এএফপি, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস, এক্স পোস্ট।

সবার দেশ/কেএম