২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর

আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিলে রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেছে আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে বেঞ্চে শুনানি শেষে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (২০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, মামলায় নানা অসামঞ্জস্য রয়েছে এবং হাইকোর্টের দেয়া খালাসের রায় বহাল থাকবে বলে তারা আশা করছেন। অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান বলেন, নিম্ন আদালতের ভুল রায় হাইকোর্ট বাতিল করেছে, সেটি বহাল থাকাই ন্যায়বিচার হবে।

এর আগে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। গত ৩১ জুলাই আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের শতাধিক নেতাকর্মী। শেখ হাসিনাও সেদিন প্রাণে বাঁচলেও আহত হন।

নিম্ন আদালতের রায়

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি

লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ এবং মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি

তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, আবু হোমাইরা পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ, আরিফ হাসান সুজন, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু (পলাতক)।

মামলার পটভূমি

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। শতাধিক মানুষ আহত হয়, অনেকেই পঙ্গু হয়ে যান। ওই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।

সবার দেশ/কেএম