শোককে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করতে তারেক রহমানের আহ্বান

বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনার পর এক আবেগঘন ও দায়িত্বশীল বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ ও সংহত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শোকাবহ একটি মুহূর্তকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, জাতির এ শোকের সময় আমি সব গণতন্ত্রপন্থি সহযোদ্ধাদের প্রতি শান্ত ও সংহত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বিভেদমূলক সংঘাত বা মব উচ্ছৃঙ্খলতা বন্ধ করার লক্ষ্যে সহনশীলতা ও আত্মসংযমের ওপর ভিত্তি করে আমাদের একটি সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

তিনি সরাসরি সহিংসতা ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু সদস্যদের নিয়ে জনতা ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির এবং সহিংসতা উসকে দেয়ার উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব গোষ্ঠীকে অনুরোধ করবো— বাংলাদেশের ইতিহাসের এমন একটি শোকাবহ মুহূর্তকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন।

তারেক রহমানের ভাষায়, এখন সময় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতিকে জিইয়ে রাখা নয়, বরং পুরো জাতিকে মানবিক ও সংবেদনশীল মনোভাব নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর।

তিনি বলেন, আমাদের শক্তি ব্যয় হোক— নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বের করা, নিহতদের সঠিকভাবে হিসাব করা, আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বিমান দুর্ঘটনার মূল কারণ নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে সুষ্ঠু তদন্তের সুযোগ করে দেয়ার কাজে।

তিনি জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, প্রাণহানির শিকার নিরীহ ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের শোক-সন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে আমাদের হৃদয়ের সব অনুভূতি প্রকাশ করা হোক। বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।

তারেক রহমানের এইবিবৃতিকে অনেকে দেখছেন সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও ছাত্রজনতার ক্ষোভ প্রশমনের কূটনৈতিক প্রয়াস হিসেবে। বিশেষত সরকারি দল কর্তৃক বিএনপির বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগের পটভূমিতে এ বার্তা বিএনপির অবস্থানকে সংহতির পক্ষে তুলে ধরতে পারে।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘শোককে পুঁজি করে’ বিভ্রান্তিকর তৎপরতা চলছে বলেই এ সতর্কবার্তা দেয়া জরুরি হয়ে উঠেছে। তারেক রহমানের এ বিবৃতি কার্যত ময়দানে সক্রিয় অতি-উৎসাহী গোষ্ঠী বা বহিরাগতের দিকেও একটি বার্তা বহন করে।

সংক্ষিপ্তভাবে, এ বিবৃতি মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়:

• শোকের মুহূর্তে রাজনৈতিক অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা
• সহিংসতা ও উসকানি বন্ধ করে মানবিক সহানুভূতিতে মনোনিবেশ
• প্রতিটি মৃত্যুর হিসাব ও তদন্তে প্রশাসনকে দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা

জাতীয় শোকের এ দুঃসময়ে তারেক রহমানের এ বার্তা জনতার মাঝে সংহতি ও দায়িত্ববোধ প্রতিষ্ঠায় তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সবার দেশ/কেএম