স্বস্তির বার্তা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য
বাজেটে বাড়ছে করমুক্ত আয়সীমা

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বাড়ছে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা। দীর্ঘদিন ধরে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নিত্যপণ্যের ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
বর্তমানে যেখানে করমুক্ত আয়সীমা বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সেখানে তা ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার কিংবা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণের প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে।
দীর্ঘ চাপের পর নীতিতে নমনীয়তা
টানা দুই অর্থবছর করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত ছিলো। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এটি ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়। এবার মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাসের কথা মাথায় রেখে সীমা বাড়ানোর চিন্তা করছে এনবিআর। সংস্থাটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের লাগামহীন দাম করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলেছে। সে চাপ কমাতেই এ সিদ্ধান্ত।
বাজারে চাহিদা বাড়বে, আশাবাদী ব্যবসায়ীরা
বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর খবরে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাতে নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়বে, যা অভ্যন্তরীণ ভোক্তা বাজারে চাহিদা তৈরি করবে। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) এবং ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন সংগঠনও ইতিমধ্যে এ দাবি জানিয়ে এসেছে। তাদের মতে, এতে স্থানীয় উৎপাদক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবেন।
কর কাঠামোতেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত
শুধু করমুক্ত সীমা নয়, আয়কর কাঠামোতেও কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। বর্তমানে করমুক্ত সীমা অতিক্রমের পর প্রথম ১ লাখ টাকায় ৫% হারে কর দিতে হয়। এবারে সেই স্তরের সীমা বাড়তে পারে, যদিও করহার (৫%, ১০%, ১৫%, ২০%, ২৫%) অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতির বাস্তব চিত্র
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বছরে গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৪৪%। বিশেষ করে গত বছরের জুলাইয়ে এই হার পৌঁছায় ১৪.১০ শতাংশে, যা ছিলো গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এসব বাস্তবতা বাজেটে করনীতি নমনীয় করার পেছনে বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বাজেট আসছে ২ জুন
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট আগামী ২ জুন উপস্থাপন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি তার নেতৃত্বে প্রথম বাজেট, যা একই সঙ্গে একটি সংকটকালীন অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্দেশক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম