Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৩ মে ২০২৫

আপডেট: ০৫:১৬, ৩ মে ২০২৫

তিন দিনের আলটিমেটাম শিক্ষার্থীদের

শিক্ষকের ওপর হামলায় মধ্যরাতে উত্তাল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষকের ওপর হামলায় মধ্যরাতে উত্তাল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হাসান মাহমুদ সাকিকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমানের বিরুদ্ধে। 

ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মধ্যরাত অবধি উত্তাল বিক্ষোভ চালায় এবং উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে দোষী শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে।

শিক্ষককে মারধর, ভর্তি হাসপাতালে

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের পাশে শিক্ষক সাকির ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে পরবর্তীতে সিটি মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুস সাদাত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ক্যাম্পাসে ক্ষোভ, রাতভর স্লোগান

রাত ১টা থেকে শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। তারা ‘শিক্ষকের নিরাপত্তা চাই’, ‘সন্ত্রাসীদের বিচার চাই’, ‘নোমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করো’—এ ধরনের স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলেন ক্যাম্পাস।

ইতিহাস ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুন্না হোসাইন বলেন, শিক্ষকদের যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ কোথায়?

আরেক শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন বলেন, নোমানের মতো ব্যক্তির এ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার অধিকার নেই। সে একজন সমাজবিরোধী।

শিক্ষকদের লাঞ্ছনা: প্রশাসনের কড়া প্রতিক্রিয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ৩৫ বছরের ইতিহাসে এত জঘন্য ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষক লাঞ্ছিত মানে গোটা শিক্ষক সমাজ লাঞ্ছিত। এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। দোষীদের তিন দিনের মধ্যে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, তোমরা জানো, আমি নিজেই গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এসেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তোমাদের প্রতিবাদ যৌক্তিক। কিন্তু আমাদের দাবি কার্যকর করতে হবে প্রক্রিয়াগতভাবে।

শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম

রাত ২টায় শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করলেও ঘোষণা দেন—তিন দিনের মধ্যে দোষীকে শাস্তির আওতায় না আনা হলে রোববার থেকে ক্লাস বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তি নয়—একটি প্রতিষ্ঠান ও তার নৈতিক ভিত্তির ওপরই আঘাত। প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও বিস্তৃত হওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক রক্ষায় এটি এক বড় পরীক্ষা।

সবার দেশ/কেএম

সম্পর্কিত বিষয়: