সুদানে মসজিদে ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৭৮

সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে এক মসজিদ। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নামাজ চলাকালে চালানো এ হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত ও আরও ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানান, বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন। মসজিদের পশ্চিমাংশ থেকে ইতিমধ্যেই কাপড় ও কম্বলে মোড়ানো অবস্থায় অন্তত ৩০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

হামলার জন্য দায়ী করা হচ্ছে আধাসামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-কে। তবে গোষ্ঠীটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালের নামাজের সময় হঠাৎ করে আকাশ থেকে ড্রোন হামলা চালানো হয়, মুহূর্তেই অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান।

এল-ফাশার বর্তমানে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দারফুরের শেষ ঘাঁটি। এখানে প্রায় তিন লাখ বেসামরিক নাগরিক যুদ্ধের ফাঁদে আটকা পড়েছেন। সম্প্রতি আরএসএফ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে। একইসঙ্গে কাছের আবু শৌক শরণার্থী ক্যাম্পেও হামলা চালায় তারা।

ইয়েল ইউনিভার্সিটির হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাবের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শরণার্থী ক্যাম্পের বড় অংশ এখন আরএসএফ-এর নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া তারা সেনাবাহিনীর মিত্রদের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ফোর্সেসের সদর দপ্তরেও প্রবেশ করেছে, যা আগে জাতিসংঘের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। যদিও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়।

এ অবস্থায় এল-ফাশারের বিমানবন্দর ও সেনা ঘাঁটি সরাসরি আরএসএফ-এর আক্রমণের আওতায় চলে এসেছে। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, সংঘাত ক্রমেই জাতিগত রূপ নিচ্ছে এবং প্রতিশোধমূলক হামলা বাড়ছে। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, বিশেষভাবে আরব নয় এমন জনগোষ্ঠীর ওপরই আরএসএফ পরিকল্পিত হামলা চালাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সহায়তা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, আরএসএফ যোদ্ধারা প্রকাশ্যে বলছে যে তারা এল-ফাশার শহরকে আরব নয় এমন সম্প্রদায় থেকে ‘পরিষ্কার’ করতে চায়। যদিও আরএসএফ এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

সুদানে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ চলছে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে। এল-ফাশারে সাম্প্রতিক এই হামলা নতুন করে বড় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে।

সূত্র: বিবিসি

সবার দেশ/কেএম