বাংলাদেশি ৭ পণ্যের আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ফল, কাঠের আসবাব ও প্রক্রিয়াজাত খাবারসহ সাত ধরনের পণ্যের স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত।
এ নিষেধাজ্ঞা শনিবার (১৭ মে) থেকে কার্যকর হয়েছে এবং তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে ভারতের ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেইন ট্রেড (DGFT)।
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন এ সংস্থা এক নির্দেশনায় জানায়, এসব পণ্য এখন থেকে কেবল কলকাতা ও মুম্বাইয়ের নাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে। স্থলপথে এসব পণ্যের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের মার্চে ভারত, বাংলাদেশি সুতা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো। তবে সদ্য ঘোষিত এ নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে রফতানি হওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক ও ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, কোলকাতা ও মুম্বাই ছাড়া ভারতের অন্য কোনো বন্দর দিয়ে এখন বাংলাদেশি পোশাক প্রবেশ করতে পারবে না। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থলবন্দরগুলোতে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তিনি আরও বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা বিশ্ববাণিজ্যের অস্থিরতার মধ্যেই এসেছে। এমন সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে রফতানি ব্যয় বাড়বে, অন্যদিকে রফতানি কমার ঝুঁকিও তৈরি হবে। ভারতে বাংলাদেশ প্রতিবছর গড়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে থাকে, যার বড় অংশই তৈরি পোশাক। তাই এটি আমাদের জন্য নতুন করে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।
তিনি যোগ করেন, যদিও নেপাল ও ভুটানের ট্রানশিপমেন্ট এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ছে না, তারপরও সামগ্রিকভাবে এটা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক আস্থা ও সহযোগিতায় চাপ সৃষ্টি করবে।
নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত অন্যান্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে:
- ফল
- কার্বোনেটেড পানীয়
- প্রক্রিয়াজাত খাবার
- প্লাস্টিক ও পিভিসি ফিনিশড পণ্য
- কাঠের ফার্নিচার
তবে মৎস্যজাত পণ্য, এলপিজি, ভোজ্যতেল ও পাথর (crushed stone) এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, একতরফা এমন সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে অসন্তোষ ও আস্থা সংকট ডেকে আনতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশের পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ বাড়বে, যার বিরূপ প্রভাব পড়বে রফতানিতে।
সবার দেশ/কেএম