Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ১৬ মে ২০২৫

আপডেট: ২১:৫৯, ১৬ মে ২০২৫

কুমিল্লায় ‘জুলাই সমাবেশে’ বিস্ফোরক অভিযোগ হাসনাত আবদুল্লাহর

আওয়ামী লীগের টাকায় চলে বিএনপির রাজনীতি

১৪ দল, মানবিক করিডোর ও অন্তবর্তী সরকারের অবস্থান নিয়েও সরব এনসিপি নেতারা

আওয়ামী লীগের টাকায় চলে বিএনপির রাজনীতি
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ‘জুলাই সমাবেশে’ এক বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিএনপির রাজনীতি এখন চলে আওয়ামী লীগের টাকায়।

একইসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পেরেছি, কিন্তু অর্থ ব্যবস্থাকে এখনx ছোঁয়া যায়নি।

আওয়ামী লীগকে ঘিরেই পুরো রাজনীতি?

সমাবেশে হাসনাত বলেন, কুমিল্লার অনেক উপজেলার রাজনীতি এখন আওয়ামী লীগের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। শুধু আওয়ামী লীগ না, বিএনপিও এখন সে টাকার উপর নির্ভরশীল। তাই সত্য বলার দায় নিয়ে আজ এ কথা বলছি—আপনারা আমাদের শত্রু ভাববেন না।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে দায়ী করলেন

তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, খুনিরা জামিনে বেরিয়ে এসে শহীদদের বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছে—এটা শুধু আমাদের ব্যর্থতা নয়, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্যারেরও ব্যর্থতা। তিনি যদি কোন চাপ বা বাধা অনুভব করেন, তাহলে সেটা জাতির সামনে তুলে ধরুন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেনো জানুয়ারি মাসেই প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলো না? এখন মে মাস—আরও কত দিন অপেক্ষা করতে হবে?

বিচারের চেয়ে বড় কোনো সংস্কার নেই

আন্তবর্তী সরকারকে সতর্ক করে এনসিপি নেতা বলেন, আপনারা যদি ভাবেন, খুনিদের বিচার কিংবা আওয়ামী লীগের বিচার অপেক্ষাকৃত গৌণ বিষয়—তাহলে আপনারা ঐতিহাসিক ভুল করছেন। বিচারই হবে সবচেয়ে বড় সংস্কার। বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য নয়।

‘মানবিক করিডোর’ ও পরাশক্তির ছায়া

হাসনাত আবদুল্লাহ অন্তবর্তী সরকারের ‘মানবিক করিডোর’ নীতির বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করার দাবি জানান। বলেন, আমরা কোনোওপরাশক্তির প্রভাব-আধিপত্যে বাংলাদেশকে রাখতে চাই না—না দিল্লি, না পিন্ডি, না ওয়াশিংটন। সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে কোনও অন্তর্বর্তী সরকার চলতে পারে না।

১৪ দল ও হতাশা

তিনি ১৪ দলীয় জোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, সরকারের ১৪ দল নিয়ে কী চিন্তা তা স্পষ্ট করতে হবে। বিচার না হওয়া, পুনর্বাসনের উদ্যোগ না থাকা এবং কর্মসংস্থানের অগ্রগতিহীনতায় আমরা হতাশ। যতক্ষণ না আমরা রাস্তায় নামলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদের কোনো পদক্ষেপই আমরা দেখিনি।

কুমিল্লা জেলা ও মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে জুলাই সমাবেশে যোগ দেন এনসিপি, বিএনপি, খেলাফতে মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- ফেস দ্য পিপলের সম্পাদক সাইফুর রহমান সাগর, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান ওয়াসিম, সচেতন রাজনৈতিক ফোরাম কুমিল্লার প্রধান সমন্বয়ক ড. শাহ মো. সেলিম, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব রিফাত রশিদ, এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাভিদ নওরোজ শাহ, জয়নাল আবেদীন শিশির, এবি পার্টি কুমিল্লা মহানগরের সভাপতি জিএম গোলাম সামদানী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক সাকিব হোসাইন, মহানগরীর আহ্বায়ক আবু রায়হান ও সদস্য সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান। সমাবেশ সঞ্চালনা কুমিল্লা মহানগরের মুখ্য সংগঠক আরাফ ভূইয়া।

হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য শুধু একটি রাজনৈতিক বক্তৃতা নয়, বরং অন্তবর্তী সরকারের কর্মকৌশল ও দায়বদ্ধতাকে প্রকাশ্যে প্রশ্নবিদ্ধ করার কৌশলী হুমকি। বিশেষ করে তিনি যে কণ্ঠে বিএনপির ‘আর্থিক নির্ভরতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তা বৃহৎ বিরোধী শিবিরের অভ্যন্তরেও বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।
আবার আইন উপদেষ্টাকে সরাসরি দায়ী করে এবং ১৪ দল ও মানবিক করিডোর নিয়ে অবস্থান চেয়ে তিনি সরকারকে নীতিগত ব্যাখ্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

সবার দেশ/কেএম