রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড: ১০ মাসেই ২৫ বিলিয়ন ডলার!

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একপ্রকার চমক বলা চলে—রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড গড়েছে দেশটি। চলতি অর্থবছরের মাত্র ১০ মাসেই ২৫.৪৬ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫.৫৩ বিলিয়ন ডলার বেশি।
এ নজিরবিহীন সাফল্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক টানাপোড়েন এবং দেশীয় ব্যাংকিং খাতে আস্থার সংকট চলছিল।
কী বলছে পরিসংখ্যান?
| মাস | প্রবাসী আয় (মিলিয়ন ডলার) |
| ---------- | ------------------------ |
| জুলাই | ১,৯১৩.৭৭ |
| আগস্ট | ২,২২১.৩২ |
| সেপ্টেম্বর | ২,৪০৪.১০ |
| অক্টোবর | ২,৩৯৫.০০ |
| নভেম্বর | ২,২০০.০০ |
| ডিসেম্বর | ২,৬৪০.০০ |
| জানুয়ারি | ২,১৯০.০০ |
| ফেব্রুয়ারি | ২,৫৩০.০০ |
| মার্চ | ৩,২৯৫.৬৩ (রেকর্ড) |
| এপ্রিল | ২,৭৫১.৯৪ |
১০ মাসের মোট: ২৫.৪৬ বিলিয়ন ডলার
কেন বাড়ছে রেমিট্যান্স?
- হুন্ডি রোধে কঠোর পদক্ষেপ: বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হুন্ডি বা অবৈধ পথে টাকা পাঠানোর প্রবণতা অনেকটা কমে এসেছে। ডলারের উচ্চ বিনিময় হার ও ২.৫% প্রণোদনা অনেককে ব্যাংকিং চ্যানেলে ফিরিয়েছে।
- রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: সরকারি থিংকট্যাংক ও অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারের ওপর আস্থার কারণে প্রবাসীরা বৈধ পথে টাকা পাঠাতে মনোযোগী হয়েছেন।
- মিডিয়া ও সরকারের প্রচারণা: ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রবাসীদের জন্য নিরাপদ, লাভজনক এবং সম্মানজনকভাবে বৈধ চ্যানেলের প্রচার কাজ করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রেমিট্যান্সের শীর্ষ ১০ উৎস দেশ
- সৌদি আরব
- সংযুক্ত আরব আমিরাত
- যুক্তরাষ্ট্র
- যুক্তরাজ্য
- মালয়েশিয়া
- কুয়েত
- ইতালি
- ওমান
- সিঙ্গাপুর
- কাতার
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, হুন্ডি কমে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারের ইতিবাচক প্রচারণা এবং স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ রেমিট্যান্স বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
তবে কিছু সতর্কবার্তাও
অর্থনীতিবিদদের মতে, এ রেমিট্যান্স প্রবাহ টিকিয়ে রাখতে হলে ব্যাংকিং চ্যানেলে আস্থার পরিবেশ, ডলার প্রণোদনা ও প্রবাসীদের সুরক্ষা অব্যাহত রাখতে হবে। একক মাসে রেকর্ড হোক বা বাৎসরিক রেকর্ড, এটি যেন হয়*ধারাবাহিক উন্নয়নের সূচক, কেবল ‘সংখ্যার গৌরব’ নয়।
সবার দেশ/কেএম