সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ
তালা ভেঙে প্রেসক্লাব দখলের হুংকার বিএনপি নেতার
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ‘তালা ভেঙে দখলে’ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিন বক্স। তার এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছে জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা।
সোমবার (১৬ জুন) রাতে জেলা শহরের এক রেস্তোরাঁয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য দেন মতিন বক্স। এরপর তিনি ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে তালা ভেঙে প্রেসক্লাব দখল করবেন।
এ বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। জেলার জ্যেষ্ঠ ও উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকরা একে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং ‘গণতন্ত্রবিরোধী মানসিকতার প্রকাশ’ হিসেবে আখ্যা দেন।
ঘটনার পরদিন সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মতিন বক্সের বক্তব্যকে ‘উসকানিমূলক ও দায়িত্বহীন’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক বকশী ইকবাল আহমদ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডিতে বলা হয়েছে, মতিন বক্সের বক্তব্যের ফলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে এবং প্রেসক্লাবে হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে মতিন বক্সের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়াচ্ছেন, ফেসবুক ও অনুসারীদের মাধ্যমে সাংবাদিকদের ছবি ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এমনকি হুমকি ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন এক যৌথ প্রতিক্রিয়ায় জানান, বিএনপি কখনোই স্বাধীন সাংবাদিকতায় হস্তক্ষেপ করে না। মতিন বক্সের বক্তব্য তার একান্ত ব্যক্তিগত। দলীয়ভাবে আমরা এ বক্তব্য সমর্থন করি না এবং বিষয়টি দলের ফোরামে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে জিডি গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাংবাদিক নেতারা মতিন বক্সের বক্তব্যকে শুধু একজন নেতার ‘উগ্রতা’ নয়, বরং গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে শঙ্কাজনক মনোভাব হিসেবে বিবেচনা করছেন। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সবার দেশ/কেএম




























