ব্যাপক সংঘর্ষ- গাড়িতে অগ্নিসংযোগ
উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর জুড়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। গত সপ্তাহ থেকে দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান শুরু করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১৮ জনকে আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধু শুক্রবারেই আটক হয়েছে ৪৪ জন।
এর প্রতিবাদে শহর জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে যা দ্রুত সংঘর্ষে রূপ নেয়।
বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ টানা তিন দিন ধরে চলছে। ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যারামাউন্ট এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।

বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে অমানবিক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবারই ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দেন। তার ডিক্রিতে বলা হয়, শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং ফেডারেল সম্পত্তি রক্ষা করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তেও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি, বরং বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ে।
তৃতীয় দিনের বিক্ষোভে একাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। অনেক বিক্ষোভকারীর হাতে ছিল মেক্সিকান পতাকা। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়েছে এবং জ্বলন্ত বস্তু নিক্ষেপ করেছে। পুলিশের গাড়িও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষ হয়েছে এডওয়ার্ড আর রয়বাল ফেডারেল বিল্ডিং, মেট্রোপলিটন ডিটেনশন সেন্টার এবং ১০১ ফ্রিওয়ের কাছেও।

লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রস্থলে যানবাহনে আগুন ধরিয়েছে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে।
ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি একে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উস্কানি বলে অভিহিত করেছেন। ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ক্ষমতার উদ্বেগজনক অপব্যবহার হিসেবে দেখছেন।
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক্স-এ দেওয়া বার্তায় সতর্ক করেছেন, প্রয়োজনে মেরিন সেনা মোতায়েন করা হতে পারে। তিনি বিক্ষোভকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি আখ্যা দিয়ে এর পেছনে সংগঠিত অপরাধী নেটওয়ার্ক বা বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
চলমান এ বিক্ষোভ এবং সংঘর্ষে লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সবার দেশ/কেএম




























