Sobar Desh | সবার দেশ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১০, ১১ জুন ২০২৫

জাতিসংঘের আশঙ্কা ‘নতুন সংকটের’

বিশ্বে নজিরবিহীন হারে কমছে সন্তান জন্মহার

বিশ্বে নজিরবিহীন হারে কমছে সন্তান জন্মহার
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে সন্তানের জন্মহার উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা মানব সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য বড় ধরনের সংকেত বহন করছে। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA) সম্প্রতি এ প্রবণতাকে বিশ্বের জন্য একটি ‘নতুন সংকট’ হিসেবে অভিহিত করেছে। কারণ, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মানুষ সন্তান নিতে পারছেন না—এমন বাস্তবতা আজ বৈশ্বিকভাবে ক্রমবর্ধমান।

সন্তান চাইলেও সন্তান নিতে পারছেন না বহু মানুষ

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে, বিশ্বব্যাপী বহু নারী-পুরুষ পরিবার গড়তে আগ্রহী হলেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন নানা কারণে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, কর্মব্যস্ততা, সময়ের অভাব, সঙ্গীর সংকট কিংবা বন্ধ্যাত্ব—এ প্রতিটি কারণই মানুষকে সন্তান নেয়া থেকে পিছিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে জন্মহার কমছে শুধু নয়, দীর্ঘমেয়াদে এটি সমাজ ও অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে।

১৪টি দেশের ওপর জরিপ: উঠে এসেছে উদ্বেগজনক চিত্র

UNFPA ১৪টি দেশের ১৪ হাজার নারী ও পুরুষের ওপর জরিপ পরিচালনা করেছে। দেশগুলো হলো—দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, হাঙ্গেরি, জার্মানি, সুইডেন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়া। এ দেশগুলো বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে।

জরিপে প্রতি পাঁচজনের একজন জানিয়েছেন, তারা অতীতে বা ভবিষ্যতে ইচ্ছামতো সন্তান নিতে পারেননি বা পারবেন না বলে মনে করেন। আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো—যেসব দেশে জন্মহার ইতিমধ্যেই আশঙ্কাজনকভাবে নেমে গেছে, সেখানকার মানুষও দুটি বা ততোধিক সন্তান চায়, কিন্তু বাস্তবতা তাদের সে ইচ্ছার বিপরীত।

জাতিসংঘের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন

UNFPA অতীতে মূলত যে নারীদের সন্তান সংখ্যা বেশি ছিলো এবং যারা জন্মনিয়ন্ত্রণে সীমাবদ্ধ ছিলেন, তাদের দিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলেছে। এখন ফোকাস দেয়া হচ্ছে সেসব দম্পতিকে, যারা সন্তান নিতে চাইলেও পারছেন না।

জনসংখ্যাবিদ স্টুয়ার্ট গিয়েটেল-বাস্তেন বলেন, জাতিসংঘ এবার প্রথমবারের মতো কম জন্মহারকে অগ্রাধিকারে আনছে। এটি শুধু জনসংখ্যা নয়, বরং একটি মৌলিক মানবিক ইচ্ছার প্রতিফলন—যা পূরণ না হওয়ার ফলে একধরনের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

সামনে আরও বিস্তৃত গবেষণার পরিকল্পনা

বর্তমান জরিপটি একটি পাইলট প্রকল্প হলেও জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ৫০টি দেশে বৃহৎ পরিসরে জরিপ পরিচালনা করা হবে। যদিও এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য পরিসংখ্যানগতভাবে সীমিত, তবুও এটি যে একটি বৈশ্বিক প্রবণতা এবং মানব উন্নয়নের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ—তা স্পষ্ট।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি কেবল জনসংখ্যা কমার সমস্যা নয়, বরং মানবজাতির ভবিষ্যৎ কাঠামো, অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা, সমাজের ভারসাম্য এবং প্রবীণদের যত্নসহ নানা ইস্যুতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। সন্তান নেয়ার ইচ্ছা এখন আর যথেষ্ট নয়—সেটিকে সম্ভব করে তোলার জন্য রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার।

বিশ্ব এখন এমন এক বাস্তবতার মুখে, যেখানে জন্মনিয়ন্ত্রণ নয়, বরং জন্মসক্ষমতার প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠছে মানব সভ্যতার নতুন চ্যালেঞ্জ।

সবার দেশ/কেএম

শীর্ষ সংবাদ:

পাঁচ অস্ত্রসহ গ্রেফতার লিটন গাজী সম্পর্কে সব জানালো পুলিশ সুপার
আনসার ভিডিপি ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থাপক গ্রেফতার
লালমনিরহাটে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
ভোলাহাটে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দালাল চক্রের খপ্পরে
বাংলাদেশ সীমান্তে পঁচছে ৩০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ
সুদের টাকার জন্য নোয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার-১
ইমরান খান বেঁচে আছেন, দেশ ছাড়তে চাপ: পিটিআই
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের প্লট দুর্নীতি মামলার রায় আজ
শুরু হলো বিজয়ের মাস
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত
খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে হাসপাতালে জামায়াত সেক্রেটারি
স্কুল ভর্তির লটারি ১১ ডিসেম্বর
বিডিআরকে দুর্বল করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাতেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড
ছয় উপসচিবের দফতর পরিবর্তন