ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে রাশিয়াকে ৫০ দিনের আল্টিমেটাম ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়াকে ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। সোমবার (১৪ জুলাই) হোয়াইট হাউজে ন্যাটোর নতুন মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ না হলে রাশিয়ার ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত কঠোর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হবে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে জানা গেছে, ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার আচরণে আমরা অত্যন্ত বিরক্ত। যদি তারা ৫০ দিনের মধ্যে সমাধানে না আসে, তাহলে খুব দ্রুতই কঠিন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ শুল্ক শুধু রাশিয়ার জন্য নয়, তাদের বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপরও আরোপ করা হবে, যাতে তাদের বিশ্ব অর্থনীতিতে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর মধ্যে একটি চুক্তিও হয়, যার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম— বিশেষ করে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা— ইউক্রেনে পাঠাবে। ট্রাম্প জানান, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ইউক্রেনের সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ন্যাটোর মাধ্যমে।
সাবেক ডাচ প্রধানমন্ত্রী ও ন্যাটোর নবনিযুক্ত মহাসচিব মার্ক রুটে জানান, ইউক্রেন এই চুক্তির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র পাবে, যা তাদের যুদ্ধ সামর্থ্য বাড়াবে।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। শুরুতে পুতিনের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করলেও রুশ বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলা তাকে কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য করেছে।
পুতিন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, আমি তাকে খুনি বলতে চাই না, তবে তিনি একজন কঠিন ব্যক্তি।
একইদিন ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলগ কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠককে জেলেনস্কি ‘ফলপ্রসূ’ উল্লেখ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন ও ইতিবাচক বার্তা এই মুহূর্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রী ইউলিয়াকে মনোনয়নের ঘোষণা দেন জেলেনস্কি। ইউলিয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি ইউক্রেনের জন্য এক সন্ধিক্ষণের সময়।
এদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, পূর্ব ইউক্রেনের ডনেস্ক ও জাপোরিজ্জিয়ায় দুটি গ্রাম তারা দখল করেছে। এছাড়া খারকিভ ও সুমি অঞ্চলে রুশ হামলায় অন্তত তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলতি বছরের জুনে রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনজুড়ে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে।
উল্লেখ্য, জুলাইয়ের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের অস্ত্র সরবরাহ স্থগিতের ঘোষণা দিলেও, ট্রাম্প প্রশাসন এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ফের সরঞ্জাম পাঠানো শুরু করেছে।
সবার দেশ/এফএস




























