অল্পের জন্য রক্ষা ক্রুদের
দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত
দক্ষিণ চীন সাগরে মাত্র আধাঘণ্টার ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও একটি যুদ্ধবিমান। রোববার (২৬ অক্টোবর) নিয়মিত মহড়ার সময় এ দুটি দুর্ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন নৌবাহিনীর প্রশান্ত মহাসাগরীয় বহর।
সৌভাগ্যবশত উভয় দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি; সব ক্রু সদস্যকেই নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে।
নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ থেকে উড্ডয়ন করা একটি এমএইচ–৬০আর ‘সি হক’ হেলিকপ্টার নিয়মিত উড্ডয়ন মহড়ার সময় সমুদ্রে পড়ে যায়। এটি ছিলো হেলিকপ্টার মেরিটাইম স্ট্রাইক স্কোয়াড্রন (এইচএসএম)–৭৩–এর ‘ব্যাটল ক্যাটস’ ইউনিটের অধীনে। দুর্ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে তিনজন ক্রু সদস্যকেই নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়।
এর ঠিক আধঘণ্টা পর, বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে একই রণতরী থেকে উড্ডয়ন করা একটি এফ/এ–১৮এফ ‘সুপার হর্নেট’ যুদ্ধবিমানও প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের সময় সমুদ্রে পড়ে যায়। স্ট্রাইক ফাইটার স্কোয়াড্রন (ভিএফএ)–২২ ‘ফাইটিং রেডককস’ ইউনিটের অধীনে থাকা বিমানের দুই পাইলট ইজেকশন সিটের মাধ্যমে সফলভাবে বেরিয়ে এসে নিরাপদে উদ্ধার হন।
দুটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন নৌবাহিনী। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা প্রতিকূল আবহাওয়া দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
দক্ষিণ চীন সাগরকে বিশ্বের অন্যতম কৌশলগত জলপথ হিসেবে ধরা হয়। চীনসহ একাধিক দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশ এ অঞ্চলের বিভিন্ন অংশের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। আন্তর্জাতিক আদালতের রায় উপেক্ষা করে বেইজিং প্রায় পুরো সমুদ্র এলাকা নিজেদের বলে দাবি করছে এবং সেখানে সামরিক স্থাপনা গড়ে তুলেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত ‘ফ্রিডম অব নেভিগেশন’ অভিযান চালায়, যাতে চীনের সামুদ্রিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করা যায়।
দুটি দুর্ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরে রয়েছেন। চলতি সপ্তাহে তার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের কথা রয়েছে, যেখানে বাণিজ্য ইস্যুই আলোচনার মূল বিষয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের সফরের প্রাক্কালে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলে জানান মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে, যা আসন্ন বৈঠকের আগে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
এ বছরের শুরুতেও লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ‘সুপার হর্নেট’ জেট দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। প্রতিটি এফ/এ–১৮ যুদ্ধবিমানের দাম প্রায় ৬ কোটি মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, ইউএসএস নিমিৎজ যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সবচেয়ে পুরোনো এবং বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরীগুলোর একটি। ১৯৭৫ সালে চালু হওয়া এ যুদ্ধজাহাজটি আগামী বছর অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সবার দেশ/কেএম




























