মে দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা
শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়

শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ছাড়া বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়— এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, শুধু স্লোগানে নয়, শ্রমিকদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন ছাড়া আমরা যে বাংলাদেশ চাচ্ছি, তা অর্জন হবে না।
বৃহস্পতিবার (১ মে) মহান মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়ন করতে হলে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে’ । প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশ গঠনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছিলো। কিন্তু সে বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ পাবে না, যদি শ্রমিকদের জীবনমান অপরিবর্তিত থেকে যায়।
আরও পড়ুন <<>> বিএনপির শ্রমিক সমাবেশে নেতা-কর্মীদের ঢল
এ বছরের মে দিবসের প্রতিপাদ্য ছিলো, ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে গড়বো এ দেশ নতুন করে’—যা উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, এ প্রতিপাদ্য কেবল স্লোগান নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথনির্দেশক হতে পারে।
ড. ইউনূস বলেন, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। একটি গ্রহণযোগ্য রোডম্যাপ তৈরি করে তার ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে আমাদের আন্তর্জাতিক মানে শ্রমমান উন্নয়ন একটি দায়িত্ব।
তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সমন্বিত একটি জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নও চলমান রয়েছে, যা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সহায়ক হবে।
ড. ইউনূস বলেন, শুধু মজুরির আলোচনা দিয়ে নয়, শ্রমিকদের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার পথ খুলে দিতে হবে। আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিক-মালিক সম্পর্ককে সম্মান ও আস্থার ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঁচটি শ্রমিক পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।
সবার দেশ/কেএম