ষষ্ঠীপূজায় মুখর মন্দিরমণ্ডপ
শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু
বোধনের মধ্য দিয়ে দেবীর আগমন সম্পন্ন হওয়ার পর রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো শারদীয় দুর্গাপূজা। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বেলগাছের নিচে ঘট স্থাপন ও ষোড়শ উপাচারে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভের মাধ্যমে পূজার সূচনা হয়। এর আগে ভোর থেকেই চলছিল পূজার সরঞ্জাম সাজানোর কাজ।
দুর্গামূর্তির মুখ উন্মোচনের সঙ্গে লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক ও সরস্বতীকে নিয়ে দেবী ত্রিনয়নী স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন বলে বিশ্বাস করেন ভক্তরা। ঢাকঢোল, উলুধ্বনি, শঙ্খনাদ ও কাসার ঘণ্টার ধ্বনিতে সকাল থেকে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানীসহ দেশের মন্দিরমণ্ডপগুলো।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের উপদেষ্টা পুরোহিত প্রণব চক্রবর্তী জানান, ‘কল্পারম্ভ’ মানে সংকল্প ও আরম্ভের সমন্বয়। এর মাধ্যমে দেবীর কাছে অঙ্গীকার করা হয় যে, পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা নিয়ম মেনেই সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, ষষ্ঠীর আগে দেবী বেলগাছতলায় বিশ্রামে থাকেন। বোধনের মাধ্যমে তাঁর ঘুম ভাঙানো হয়েছে। ষষ্ঠীতে পূজা ও অঞ্জলির মধ্য দিয়ে আমরা দেবীর কাছে শান্তি ও শুভশক্তির প্রার্থনা করেছি।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অঞ্জলির সময় ভক্তরা দেবীর চরণে পুষ্প, গন্ধ, অর্ঘ্য ও বাদ্য নিবেদন করে দেশ ও বিশ্ব থেকে অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রার্থনা করেন। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে আমন্ত্রণ ও অধিবাস, এরপর শুরু হবে দেবী দর্শন।
হিন্দু আচার অনুযায়ী মহালয়া, বোধন ও সন্ধিপূজা মিলে দুর্গোৎসবের পূর্ণতা লাভ করে। পঞ্জিকা মতে, এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে গজে (হাতির পিঠে) আর দশমীতে বিদায় হবে দোলায়।
মহালয়ার (২১ সেপ্টেম্বর) মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছিল। বিশ্বাস করা হয়, দশভূজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মর্ত্যে আসেন এবং কয়েক দিন সন্তানদের নিয়ে পিতৃগৃহে অবস্থান শেষে পুনরায় ফিরে যান দেবালয়ে।
এ বছর শুধু ঢাকায়ই ২৫৯টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা গতবারের তুলনায় সাতটি বেশি। সারা দেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৩৫৫, যা গত বছরের তুলনায় এক হাজারেরও বেশি।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয়ভাবে পাঁচ দিনব্যাপী পূজার আয়োজন করেছে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সপ্তমীর সকালে অনুষ্ঠিত হবে নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও মহাসপ্তমীর বিহিত পূজা। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে দেবীর দশমী বিহিত পূজা, দর্পণ বিসর্জন, দুপুরে রক্তদান কর্মসূচি এবং বিকেল ৩টায় বের হবে বিজয়া শোভাযাত্রা।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে এ বছরও সবচেয়ে বড় পরিসরে মহাঅষ্টমীর কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১১টায় ষোড়শ উপাচারে কুমারীরূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হবে ফুল, বেলপাতা, ধূপ ও প্রদীপ নিবেদনের মাধ্যমে।
সবার দেশ/এফএস




























