দেশব্যাপী মহাউৎসব, ফ্লাইপাস্ট থেকে বিজয়মেলা
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী সরকারের কর্মসূচি
মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপনকে সামনে রেখে সারাদেশে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ কর্মসূচির বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়। সভায় বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়।
তেজগাঁওয়ে ফ্লাইপাস্ট, প্যারাট্রুপারের পতাকা লাফ—উন্মুক্ত থাকবে জনসাধারণের জন্য
১৬ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর পৃথক ফ্লাইপাস্ট মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তিতে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা নিয়ে প্যারাস্যুটিং করবেন। সব আয়োজন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য শহরেও তিন বাহিনীর ফ্লাইপাস্ট মহড়া ও ব্যান্ড-শো অনুষ্ঠিত হবে।
তিন দিনব্যাপী বিজয়মেলা ও শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতা
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবারও সারাদেশে তিন দিনব্যাপী বিজয়মেলা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে শিশু-কিশোররা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় দিবসের বিশেষ আয়োজন
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে
- ১৫ ডিসেম্বর: বিকেল ৩টায় অ্যাক্রোবেটিক শো, সন্ধ্যা ৬টায় যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’।
- ১৬ ডিসেম্বর: বিকেল ৩টায় বিজয় দিবসের গান পরিবেশন।
একযোগে ৬৪ জেলায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবে নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা।
জাতীয় গর্বের দীপ্তি—উদ্বেল উপদেষ্টারা
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, এবারের বিজয় দিবসে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সারা দেশের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে স্বাধীনতার গান যেমন প্রেরণা দিয়েছিলো, ঠিক তেমনি এবারের বিজয় দিবসও নতুন প্রজন্মকে এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা দেবে। তিনি ৫৪ পতাকায় ৫৪ প্যারাট্রুপারের জাম্প, কনসার্ট, যাত্রাপালা ও বিজয়মেলার পুরো আয়োজনকে ‘অতীতের যেকোনও উদযাপনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
আলো, তোপধ্বনি, সংবর্ধনা ও বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী
বিজয় দিবসের দিন
- সব সরকারি-বেসরকারি ভবন, দূতাবাস ও মিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন
- ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা
- একত্রিশবার তোপধ্বনি
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ অনুষ্ঠান
- জেলা-উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা
জাহাজ ও সিনেমা হলে বিশেষ উন্মুক্ত আয়োজন
দেশের প্রধান বন্দরগুলোর জেটি ও ঘাটে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সিনেমা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং উন্মুক্ত স্থানে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
জাদুঘর ও বিনোদনকেন্দ্রে বিনা টিকিটে প্রবেশ
সারাদেশের সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি জাদুঘর ১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা টিকিটে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সব বিনোদনকেন্দ্র শিশুদের জন্য বিনা টিকিটে উন্মুক্ত থাকবে সারা দিন।
ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা
মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব উপাসনালয়ে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা হবে। হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র ও শিশু পরিবারে প্রীতিভোজ আয়োজন করা হবে।
সভায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
সবার দেশ/কেএম




























