Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৫ মে ২০২৫

১১তম গ্রেডের দাবি

কর্মবিরতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

কর্মবিরতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
.

সরকারের পক্ষ থেকে ১২তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন স্কেল চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।

দাবি পূরণ না হওয়ায় আজ সোমবার (৫ মে) থেকে দেশজুড়ে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন তারা।

এর আগে শিক্ষক সংগঠনগুলো রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলো।

সহকারী শিক্ষকরা আগে থেকেই ১০ম গ্রেড দাবি করে আসছিলেন, তবে এখন তারা বলছেন— অন্তত ১১তম গ্রেডে বেতন দিয়ে শুরু করুক সরকার।

এছাড়াও তাদের মধ্যে আরও দুটি বড় দাবি রয়েছে—

  • চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা দূর করতে হবে,
  • প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে।

এ তিন দফা দাবিতে শিক্ষকদের কর্মসূচি চলছে ধাপে ধাপে:

  • ১ থেকে ১৫ মে: প্রতিদিন ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি
  • ১৬ থেকে ২০ মে: প্রতিদিন ২ ঘণ্টা
  • ২১ থেকে ২৫ মে: অর্ধদিবস কর্মবিরতি
  • ৬ মে থেকে: অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় ৬৫,৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ লাখ শিক্ষক কর্মরত আছেন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন পেলেও, সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন।

গত ১৩ মার্চ উচ্চ আদালতের এক রায়ে দেশের প্রায় ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষককে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ১০ম গ্রেডে বেতন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আদালতের রায় অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড উন্নীত করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও একধাপ উন্নয়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং সরকার গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত পরামর্শক কমিটি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের কাছে এক প্রতিবেদনে শুরুতেই শিক্ষক পদে ১২তম গ্রেডে নিয়োগ, দুই বছর পর স্থায়ীকরণ, এবং আরও দুই বছর পর ১১তম গ্রেডে উন্নীতির প্রস্তাব দিয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে ১০ম গ্রেড।

তবে শিক্ষক নেতারা এই প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি নন। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেন, চার বছর অপেক্ষা নয়, শুরু থেকেই ১১তম গ্রেডে বেতন দিতে হবে। একইসঙ্গে পদোন্নতির শতভাগ নিশ্চয়তা ও উচ্চতর গ্রেড শর্তহীনভাবে দিতে হবে।

অন্যদিকে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল-আমীন বলেন, আমরা এখনই ১১তম গ্রেড চাই। পরে নতুন বেতন কাঠামো হলে তা আলাদা বিষয়।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দিতে হলে নতুন বেতন কাঠামো দরকার, যা এখনই সম্ভব নয়। আপাতত ১২তম গ্রেডে নিয়োগ ও চার বছর পর ১১তম গ্রেডে উন্নয়নের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ চলছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা দেয়া হলেও বাস্তবায়নে দীর্ঘ বিলম্ব হয়। শেষ পর্যন্ত আদালতের হস্তক্ষেপে প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়।

সবার দেশ/কেএম

সম্পর্কিত বিষয়: