বিদেশি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের হাত ধরেই এগোচ্ছে দেশের সৌরশক্তি

বাংলাদেশে খোলা জায়গার সংখ্যা কম। ফলে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন দীর্ঘদিন ধরেই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সমাধান মিলছে পোশাক শিল্পে—দেশের হাজারো গার্মেন্টসের বিশাল ছাদ এখন হয়ে উঠছে নবায়নযোগ্য শক্তির ভরসাস্থল।

কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর চাপই এ রূপান্তরের বড় চালিকাশক্তি। বিশেষ করে ড্যানিশ ব্র্যান্ড বেস্টসেলার–এর মতো কোম্পানিগুলো এখন সরাসরি কারখানাগুলোকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তরে সহযোগিতা করছে।

ছাদের ওপরেই বিদ্যুৎকেন্দ্র

ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলোর পক্ষে নিজের খরচে সোলার সেটআপ করা কঠিন। এ সমস্যায় পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশি জ্বালানি প্রতিষ্ঠান এসওএলশেয়ার। তাদের সঙ্গে মিলে বেস্টসেলার বাস্তবায়ন করছে ‘গ্রিনার গার্মেন্টস ইনিশিয়েটিভ (জিজিআই)’—যেখানে কারখানার ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সরাসরি উৎপাদনে ব্যবহার হচ্ছে বিদ্যুৎ।

এসওএলশেয়ার–এর উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজা সুলতানা মুক্তি বলেন—

ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগিতা বাড়লে পোশাক খাতে সবুজ জ্বালানির প্রসার আরও ত্বরান্বিত হবে।

গত ১৮ মাসেই জিজিআই প্রকল্পের পরিধি ২০০ শতাংশ বেড়েছে—যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিশাল সম্ভাবনা, সীমাবদ্ধতাও আছে

গবেষণা বলছে—শিল্পাঞ্চলভিত্তিক ছাদ ব্যবহার করে বাংলাদেশ ৫ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে, যা দেশের মোট সক্ষমতার প্রায় ২০ শতাংশ।

কিন্তু সমস্যা হলো—অনেক কারখানা মালিক বিনিয়োগের অর্থ যোগাড়েই হিমশিম খাচ্ছেন। জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলমের মত—

সম্ভাবনা আছে প্রচুর, কিন্তু অর্থায়ন ও নীতি সহায়তা আরও জোরালো হওয়া জরুরি।

ফ্যাশন ব্র্যান্ডের লক্ষ্য: কার্বন নিঃসরণ কমানো

বিশ্বব্যাপী টেকসই উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েই বেস্টসেলারসহ বহু ব্র্যান্ড বাংলাদেশে সবুজ বিদ্যুৎ ব্যবহারে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে।

বেস্টসেলার–এর কর্মকর্তা ফেলিসিটি টেপসেল বলেন—

বাংলাদেশ থেকে কেনা আমাদের বিশাল পরিমাণ পণ্যের উৎপাদনে যেন ক্ষতিকর নির্গমন কম হয়—এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি। সরবরাহকারীদের সঙ্গে মিলে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণ করতে চাই।

বাংলাদেশের পোশাক খাত শুধু অর্থনীতির চালিকাশক্তি নয়—এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানিরও পথিকৃৎ। ছাদে ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর এ উদ্যোগ শুধু বিদ্যুৎ সাশ্রয়ই করছে না, বরং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের টেকসই ব্র্যান্ডিংকেও শক্ত করে তুলছে।

তথ্যসূত্র: ডয়চে ভেলে

সবার দেশ/কেএম