Header Advertisement

Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:১৪, ৪ মে ২০২৫

উদ্বেগে কক্সবাজার

আরও ৫ হাজার নতুন রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

আরও ৫ হাজার নতুন রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা ও দমন-পীড়নের মুখে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার (৩ মে) রাত পর্যন্ত কক্সবাজারে নতুন করে আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে।

১ মে পর্যন্ত ২০২৫ সালে অনুপ্রবেশকারী নতুন রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ১৮ হাজারে।

ক্যাম্পে উপচে পড়া ভিড়, আশ্রয় সংকটে কর্তৃপক্ষ

সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এসব নতুন রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ বিদ্যালয় ও অন্যান্য কাঠামোতেও ঠাঁই নিচ্ছে। আশ্রয় সংকটের কারণে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশ সরকারকে একটি চিঠিও দিয়েছে, তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চিঠির জবাব দেয়া হয়নি।

রাখাইনে ভয়াবহ দমন-পীড়ন: আরসার খোঁজে আরাকান আর্মির অভিযান

রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসার পেছনে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাখাইনের নতুন দমন অভিযান। আরাকান আর্মি (AA) এখন নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাখাইনের বহু এলাকায়, আর তারা আরসার (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের ওপর চালাচ্ছে নিপীড়ন।

টেকনাফের জাদিমুড়া ক্যাম্পে আশ্রিত আমির হোসেন জানান, তার স্বজনদের গ্রামে ঢুকে আরাকান আর্মি প্রকাশ্যে গুলি ছুড়েছে, মাইকিং করে সবাইকে মাঠে জড়ো করেছে এবং জোর করে আরসার সহযোগীদের নাম প্রকাশ করতে বলেছে। কেউ না বললে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। রাখাইনের লডাইং, নাকমুড়া, কুলিপাড়াসহ অনেক জায়গায় রোহিঙ্গারা এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

সীমান্তে টহল জোরদার, অনুপ্রবেশ রোধে সতর্ক বিজিবি

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সীমান্তে টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। নাফ নদ ও স্থলপথে কড়া নজরদারি চলছে। পাশাপাশি মাদক ও মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত আছে।

দীর্ঘায়িত সংকট, আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অনুপস্থিত

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অনুপ্রবেশের ধারা চলতে থাকলে কক্সবাজারে মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর অবস্থান না থাকায় মিয়ানমারের সেনা-সহযোগী বাহিনীগুলো রোহিঙ্গাদের স্রেফ 'উচ্ছেদযোগ্য' জনগোষ্ঠী হিসেবে দমন করছে।

এ প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে—বাংলাদেশ আর কতটা এ বোঝা বইবে? আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো না হলে কি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান আদৌ সম্ভব?

সবার দেশ/কেএম

সম্পর্কিত বিষয়: