সবাই ভাসমান হকার
ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যায় গ্রেফতার ৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ মনসুর।
ওসি বলেন, গ্রেফতার তিনজনই পেশায় ভাসমান হকার এবং তারা নিয়মিত মাদকসেবনে লিপ্ত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি ও সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
তবে পুলিশ এখনো তাদের পূর্ণ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তরা সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়।
এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহত সাম্য ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে এ হত্যাকে রাজনৈতিক টার্গেটিং হিসেবে উল্লেখ করছেন। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত এটিকে ‘পথচারী খুন’ বলেই দেখছে।
শাহবাগ থানার ওসি জানান, মাদকাসক্ত ও সুযোগসন্ধানী ভাসমান অপরাধীরাই সাম্যকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে এখন পর্যন্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবু বিষয়টি আরও গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।
এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে আবারও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে—রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে এমন একটি জায়গায় যেখানে সারাক্ষণ নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি, সেখানেও শিক্ষার্থীরা কতটা নিরাপদ?
সাম্য হত্যার প্রকৃত উদ্দেশ্য—রাজনৈতিক, ডাকাতি না মাদকাসক্তদের হঠাৎ উন্মত্ততা—তা স্পষ্ট হতে এখনও সময় লাগবে। তবে তার মৃত্যুতে শিক্ষাঙ্গনে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া।
সবার দেশ/কেএম