আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
জাপায় নতুন নেতৃত্ব: বহিষ্কৃতদের পুনর্বহাল
জাতীয় পার্টির (জাপা) অভ্যন্তরীণ সংকট নতুন মোড় নিয়েছে। দলের জি এম কাদেরবিরোধী অংশ আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে গত কয়েক বছরে বিনা নোটিশে বহিষ্কৃত সব নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাদের স্বপদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর গুলশান-২ নম্বর এলাকার একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। জাপার জি এম কাদেরবিরোধী অংশের দফতর সম্পাদক এম এ রাজ্জাক খানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা ঘিরে নতুন পরিস্থিতি
ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম গত ৩০ জুলাই এক আদেশে জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় ১২ আগস্ট পর্যন্ত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। এ প্রেক্ষাপটে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও তার সমর্থকেরা আদালতের আদেশকে ভিত্তি করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বাদীপক্ষের নেতা ও সাবেক মহাসচিব মুজিবুল হক বলেন,
আদালতের আদেশে চেয়ারম্যানের হাত বাঁধা। ফলে বহিষ্কারাদেশগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে, এবং বহিষ্কৃত নেতারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বহাল হয়েছেন। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রেসিডিয়ামের বৈঠক আহ্বান করেন এবং নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
কাদেরপন্থীদের পাল্টা দাবি
অন্যদিকে জি এম কাদেরপন্থী অংশের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারি এ বৈঠককে সম্পূর্ণ বেআইনি আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন,
আইনগতভাবে কেবল চেয়ারম্যান বা তার মনোনীত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই সভা ডাকতে পারেন। বহিষ্কৃত কেউ পুনর্বহাল হয়নি, তাই সভার সিদ্ধান্তের কোনও বৈধতা নেই।
বহিষ্কৃতদের পুনর্বহাল ও নতুন নেতৃত্ব
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সুনীল শুভ রায়সহ অনেক বহিষ্কৃত নেতাকে পুনর্বহাল করা হয়। এরপর আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলের করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রত্না, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহিরসহ আরও অনেকে। ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন ফখরুল ইমাম, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, এ কে এম সেলিম ওসমানসহ আরও কয়েকজন নেতা।
সভা বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল চারটা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
অভ্যন্তরীণ সংকট জটিলতর
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আদালতের নির্দেশনা ও দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব জাপাকে নতুন করে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আগামী ১২ আগস্ট আদালতের পরবর্তী শুনানি এবং দুই পক্ষের পরবর্তী পদক্ষেপ এখন দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সবার দেশ/কেএম




























