রেমিট্যান্স-রফতানিই ভরসা
আমদানি দায় মিটিয়েও রিজার্ভ সন্তোষজনক

মার্চ ও এপ্রিল মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পরও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের ওপরে রয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিলো ২২.০৬ বিলিয়ন ডলার, দিন শেষে তা দাঁড়িয়েছে ২০.১৮ বিলিয়ন ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, ১ দশমিক ৮৮৩ বিলিয়ন ডলারের আকু বিল পরিশোধ করা হলেও রিজার্ভে বড় ধরনের চাপ পড়েনি। এখন রিজার্ভের অবস্থা স্থিতিশীল। রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ের ধারাবাহিকতা এ স্থিতিশীলতায় বড় ভূমিকা রাখছে।
সরকার পতনের পর দৃশ্যপট বদল
২০২২ সালের আগস্টে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮.০৬ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকলেও, হাসিনার চোরতন্ত্রের লুটপাট, দুর্নীতিজনিত অর্থপাচার ও অপরিকল্পিত প্রকল্পের কারণে তা ক্রমাগত কমতে থাকে। সরকারের পতনের আগে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা নেমে আসে ২০.৩৯ বিলিয়নে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ভারতে পলায়নের আগে জাতির কাঁধে রেখে যায় বিশাল অংকের ঋণের বোঝা।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষণা দেয়, তারা রিজার্ভ থেকে আর ডলার বিক্রি করবে না। সে সঙ্গে শুরু হয় অর্থপাচার রোধে কড়া অবস্থান। এর ফলে আগের সরকারের রেখে যাওয়া ৩৭০ কোটি ডলারের বকেয়া পরিশোধ করেও রিজার্ভ আবার ঘুরে দাঁড়ায়।
আইএমএফ শর্ত ও বাস্তব রিজার্ভের চিত্র
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ৪ মে পর্যন্ত মোট বা গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭.৩৫ বিলিয়ন ডলারে। আর আইএমএফ-এর বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে পরিমাপ অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ (usable reserve) ২১.৯৭ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রিজার্ভের এমন স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক ইতিবাচক বার্তা। তবে তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য রেমিট্যান্স ও রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং স্বচ্ছ অর্থনৈতিক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
সবার দেশ/কেএম