Sobar Desh | সবার দেশ ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০২:২৮, ৩১ মে ২০২৫

রাস্তায় ফেলে মারধর, সারা দেশে উত্তাল প্রতিক্রিয়া

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেত্রী বর্ষার ওপর হামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেত্রী বর্ষার ওপর হামলা
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী বৈশাখী ইসলাম বর্ষার ওপর ভয়াবহ হামলার ঘটনায় সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। বর্ষাকে রাস্তার ওপর ফেলে লাঞ্ছনা ও শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসছেন।

ঘটনা কী ঘটেছিল?

শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে নগরকান্দার ভাবুকদিয়া এলাকায় বর্ষাকে প্রকাশ্যে মারধর ও অপমান করে স্থানীয় গাজী গোষ্ঠীর একদল সন্ত্রাসী। হামলার পেছনে পূর্বপরিকল্পিত প্রতিহিংসা কাজ করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। জানা যায়, বর্ষা তার ছোট বোনকে উত্যক্ত করার ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপরই ফেরার পথে বর্বরোচিত হামলার শিকার হন তিনি।

হামলার পর কান্নায় ভেঙে পড়া বর্ষার লাইভ ভিডিও

হামলার পর রক্তাক্ত ও আতঙ্কিত বর্ষা ফেসবুক লাইভে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সহায়তা চান, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ভিডিওটি দেখেই বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

হামলাকারীদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা?

পরিবারের অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় সেকেন গাজী, সোহাগ গাজীসহ আরও কয়েকজন, যারা একসময় আওয়ামী লীগের অনুসারী থাকলেও বর্তমানে বিএনপির নাম ব্যবহার করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করছে। স্থানীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতনসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বর্ষার উপর হামলা তাদের সাম্প্রতিক সহিংসতারই ধারাবাহিকতা বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।

পুলিশকে বাধা, কনস্টেবল গুরুতর আহত

হামলার খবর পেয়ে নগরকান্দা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। তবে গ্রেফতারের সময় সেকেন গাজীর নেতৃত্বে পুলিশের ওপরও হামলা হয়, যাতে কনস্টেবল হান্নু শরীফ গুরুতর আহত হন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাজপথে শিক্ষার্থীরা, সেনাবাহিনী মোতায়েন

ঘটনার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় সড়ক অবরোধ করে, যার ফলে অর্ধশতাধিক যানবাহন আটকে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ, র‍্যাব এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

সংগঠনের কঠোর হুঁশিয়ারি

সংগঠনের আহ্বায়ক কাজী রিয়াজ বলেন, বর্ষার ওপর হামলা মানে নারীর অধিকার, শিক্ষার্থীদের কণ্ঠ এবং গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত। এ হামলার বিচার না হলে ছাত্রসমাজ আর চুপ করে থাকবে না। আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

নগরকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্ষার ওপর হামলা কোনও বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়, এটি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে ওঠা অপরাধতন্ত্রের ভয়াবহ উদাহরণ, যেখানে পতিত রাজনৈতিক শক্তি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী নারী, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সকলের ওপর প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা। প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন—এবারও কি বিচার শুধু ‘তদন্ত চলছে’ বলেই শেষ হবে? নাকি বর্ষার কান্না ও প্রতিবাদ সারা দেশের ছাত্রসমাজকে জাগিয়ে তুলবে?

সবার দেশ/কেএম

শীর্ষ সংবাদ:

পাঁচ অস্ত্রসহ গ্রেফতার লিটন গাজী সম্পর্কে সব জানালো পুলিশ সুপার
আনসার ভিডিপি ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থাপক গ্রেফতার
লালমনিরহাটে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
ভোলাহাটে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দালাল চক্রের খপ্পরে
বাংলাদেশ সীমান্তে পঁচছে ৩০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ
সুদের টাকার জন্য নোয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার-১
ইমরান খান বেঁচে আছেন, দেশ ছাড়তে চাপ: পিটিআই
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের প্লট দুর্নীতি মামলার রায় আজ
শুরু হলো বিজয়ের মাস
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত
খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে হাসপাতালে জামায়াত সেক্রেটারি
স্কুল ভর্তির লটারি ১১ ডিসেম্বর
বিডিআরকে দুর্বল করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাতেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড
ছয় উপসচিবের দফতর পরিবর্তন