গ্রেফতারের জোর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
ফরিদপুরে এ কে আজাদকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা
ফরিদপুরে কয়েকদিন ধরে চলা গ্রেফতারের দাবির আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর)রাতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো সমন্বিত বিক্ষোভ ও মশাল মিছিলে অংশ নিয়ে সাবেক এমপি আবদুল কাদের আজাদ ওরফে এ কে আজাদকে শহরে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে—যেখানে তাকে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে এবং ফরিদপুরের মাটিতে তাকে আর ঢুকতে দেয়া হবে না।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় স্থানীয় মহিম স্কুলে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মহানগর বিএনপির ১২ ও ১৬ নং ওয়ার্ড আয়োজিত সভায় ১২নং ওয়ার্ডের সভাপতি ইসমাইল হোসেন লাবলু সভাপতিত্ব করেন। সভায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কায়ুম, সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রশিদ বাচ্চু, ১৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি মাসুদ রানা, ১২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক লিপু শেখ, ১৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শাহিদ প্রভৃতি বক্তৃতা করেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, এ কে আজাদ আওয়ামী লীগের ‘হেলমেট ও হাতুরি বাহিনী’সহ সন্ত্রাসীদের নিয়ে বৈঠক করে ফরিদপুর অশান্ত করার চেষ্টা করছেন এবং তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। তারা আরও বলেন, এ কে আজাদ শুধু রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতাকারী নয়—তিনি ‘লুটেরা’ এবং নিরীহ মানুষের জমি দখল ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হরণ করেছেন; সে দাঁড়িপেটে অবৈধভাবে অর্থ খরচ করে পুনর্বাসন চালাচ্ছেন। এসবের প্রতিকার হিসেবে বক্তারা অবিলম্বে তার গ্রেফতার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মশাল মিছিল মহিম স্কুলের সামনে থেকে বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাজরাতলা মোড়ে শেষ হয়। একই সময়ে মহানগর যুবদলের উদ্যোগে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল কমলাপুর তেতুলতলা থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মুজিব সড়ক, প্রেসক্লাব হয়ে নিলটুলী ও জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজওয়ান বিশ্বাস তরুণ সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সভায় মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিনান, কৃষক দলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকী, যুবদল নেতা রুৎফর রহমানসহ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বন্ধুসুলভের স্লোগান ও চিৎকারে অনুষ্ঠানস্থল পলশিল্পে পরিণত হয়—‘এ কে আজাদকে গ্রেফতার করো’, ‘খুনি—হাসিনের দোসরদের আস্তানা ফরিদপুরে হবে না’ ইত্যাদি ধ্বনিতে উথ্থিত হয়। বক্তারা প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করে দাবি তুলেছে, কারণ তাদের দাবি—এ কে আজাদ প্রশাসনের আশ্রয়ে সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও গ্রেফতার হচ্ছেন না; পুলিশ ও প্রশাসন তাকে ‘শেল্টার’ দিয়ে আসছেন। তারা পুলিশ সুপারকে স্থানান্তরেরও দাবি তুলেছেন।
প্রতিবাদকর্মীরা আরও বলেছে যে এ কে আজাদ ফরিদপুর পুনরায় সংগঠিত করতে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করছেন এবং ঢাকায় থেকে অপপ্রথা চালাচ্ছেন—যা গ্রামাঞ্চলে অশান্তি বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
মিছিল ও সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও শহরে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং জনগণের মধ্যে ক্ষুব্ধ অনুভূতি স্পষ্ট। স্থানীয়রা এখন দ্রুত তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছেন, যাতে শহরের সাধারণ জীবনকে স্বাভাবিক রাখা যায় এবং আর কোনো সহিংস ঘটনা না ঘটে।
সবার দেশ/কেএম




























