নয় বছর পরও শেষ হয়নি অনুসন্ধান
রিজার্ভ চুরি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ১৩ জানুয়ারি
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আর্থিক জালিয়াতি—৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের রিজার্ভ চুরির মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল আবারও পেছালো। সিআইডি প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় আদালত নতুন করে ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ছিলো মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিন। তবে সিআইডি কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। ফলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
নয় বছরেও শেষ নয় তদন্ত
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট সিস্টেমে হ্যাকিং করে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়, যা পরবর্তীতে ফিলিপাইনে পাচার করা হয়। আন্তর্জাতিক হ্যাকিং গ্রুপের সঙ্গে দেশের ভেতরের একটি চক্র যুক্ত ছিলো বলে দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ করছে তদন্তকারী সংস্থা।
চুরির ঘটনার এক মাস পর, অর্থাৎ ১৫ মার্চ ২০১৬, বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি করা হয় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী-২০১৫), তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬-এর ৫৪ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারা অনুযায়ী।
কেনো এতো দেরি?
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে—
- বিদেশি সংস্থা ও ব্যাংকের সঙ্গে একাধিক ধাপের তথ্য বিনিময়ের জটিলতা,
- ফিলিপাইনে পাঠানো অর্থের লেনদেন ট্র্যাকিংয়ে দীর্ঘমেয়াদি আইনি প্রক্রিয়া,
- যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ—একাধিক দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়জনিত ব্যাপক সময়ক্ষেপণ, এসবই তদন্তকে ধীর করেছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচিত হ্যাকিং ঘটনা
রিজার্ভ চুরি কাণ্ড বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি সাইবার অপরাধ। সুইফট কোড জালিয়াতির মাধ্যমে এতো বড় অঙ্কের অর্থপাচারের ঘটনা এটিই প্রথম, যা বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আলোচনার জন্ম দেয়।
তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন
নয় বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে—এ মামলার বিচার কি আদৌ দ্রুত সম্ভব? আদালত আবারও সময় দিলেও সিআইডি এবার প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
সবার দেশ/কেএম




























