কবিতা
চন্দনগন্ধের অপেক্ষায়

আমাদের দেখা হয়েছিলো অনেকবার বেশ কয়েকবার।
গিয়েছিলাম তোমার সাথে রাস্তার ধারে,
হাজার ঠোঁটের চুমুতে ভরা,
কোটি লোকের চুমুক জড়ানো চায়ের কাপে।
আমাদের বসা হয়নি পাশাপাশি,
ঘোরা হয়নি হুড খোলা এক রিকশায়।
দেখা হয়নি চাঁদের রাতে।
মফস্বল শহরের শ্রান্তি, দেখা হয়নি গ্রামের মেলা তোমার সাথে।
চড়া হয়নি কোন লোকাল ট্রেনে, না কোন আন্তঃনগর।
পাশাপাশি বসিনি, কোন দূর পাল্লার বাসে।
বেশ কয়েকবার গিয়েছি তোমাকে নিয়ে ষ্টেশনে, বিদায় জানিয়েছি।
আমাদের নেই কোন শীতের সকালের স্মৃতি।
ভাপা পিঠে খাবার কোন ইতিহাস আমাদের নেই।
আমাদের ছিলোনা ভালোবাসার জেব্রা ক্রসিং,
লাইট অফ হলে হাত ধরে পার হবো।
তুমি সবে জিন্স পরা ধরেছো, চলনে, বলনে আধুনিকতার ছোঁয়া
আমিও বেলবটম প্যান্ট পরি, গলগস চোখে,
আধুনিকতা আমাকেও মানাতো,
তবুও বলা হয়নি- ভালোবাসি তোমাকে।
নিমীলিত ভালোবাসা আমাকে এখনও ভাবায়।
ক্রিসেন্ট রোডের ধারে
রোদের ভিড়ে আমি এখনও চুড়ির শব্দ পাই।
অথচ আমাদের প্রেম ছিলোনা কভু।
তোমার গ্রীবায় পড়েনি আমার চুম্বন,
ফিসফিসিয়ে বলিনি কানে কানে ‘ভালোবাসি’,
তবুও এলিয়ে পড়া চুলে আমি হারিয়েছি বার বার নিজেকেই।
ঘাসের জাজিমে বসেছি অনেকবার
তবুও তোমার মোহময় চোখ আমাকে চিনতে পারেনি।
আমাদের পাহাড় দেখার কোন স্মৃতি নেই, নেই সমুদ্র দেখার।
আমাদের কবিতা পড়ার অনেক কাহিনী আছে,
আছে বাঁকা করে মাইক ধরার গল্প,
আছে কবিতার মাঝে তাল কেটে যাবার মুহুর্ত
আমাদের এক সাথে বৃষ্টিতে ভিজে যাবার গল্প আছে,
আছে বাস মিস করে পরের বাসের অপেক্ষায় থাকা।
তবুও আজ আমার অনেক কিছুই নেই।
পারিনি কোন নিষিদ্ধ দরজায় আঘাত করতে,
গ্রামের কোন মেলায় তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যেতে,
বালক বয়েসে তোলা একটা ছবি- যা আমার কাছে আছে,
পেরেছি কেবল তা চুরি করতে
তোমার বইয়ের ভাঁজে ছিলো অনেক যতনে।
উজ্জ্বল ছবিতে আমি সোনা খুঁজতে গিয়ে হীরে পেয়েছিলাম,
কিন্তু নীলা তো সকলের নহে।