শুভ জন্মদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

আজ (শনিবার) দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন। ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

তার বাবা দুলা মিঞা সওদাগর এবং মা সুফিয়া খাতুন। স্ত্রী অধ্যাপক দিনা আফরোজ ইউনূস। তাদের দুই কন্যা রয়েছে।

২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের অন্যতম আন্তর্জাতিক পরিচিতি ও সম্মানের প্রতীক।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অনুরাগী ড. ইউনূস চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশনে ১৬তম স্থান অর্জন করেন। পরে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৫ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭১ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

 

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূমিকা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে তিনি বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার গড়ে তোলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

 

গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা

স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে দেশের দুর্ভিক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন ড. ইউনূস। ১৯৭৬ সালে জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করেন, যা ১৯৮৩ সালে পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকে রূপ নেয়। বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে এই মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।

 

অর্জন ও স্বীকৃতি

নোবেল শান্তি পুরস্কার ছাড়াও তিনি বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম, কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

 

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব

২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন ঘটে। এরপর শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। তিনি বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।

নোবেলজয়ী এই সমাজসংস্কারক ও অর্থনীতিবিদের জন্মদিনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহল থেকে শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।