বর্ধিত ট্যারিফ আদায় করতে না পারার জের
চট্টগ্রাম বন্দরে বৃহস্পতিবার থেকে রফতানি কার্যক্রম বন্ধ
চট্টগ্রাম বন্দরে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো বা অফডক কর্তৃপক্ষ নতুন বর্ধিত ট্যারিফ আদায় করতে না পারার জের ধরে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে সব রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার অঘোষিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডিপো মালিকরা বড় শিপিং লাইনসগুলোকে মৌখিকভাবে কনটেইনার না পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন, তবে বন্দরের প্রশাসন, শিপিং এজেন্ট, বিজিএমইএ বা বিকেএমইএকে এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়নি।
অফডক সূত্রে জানা গেছে, বিকডা সংগঠন গত তিন মাস আগে নতুন ট্যারিফ কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়। আগস্টে এই উদ্যোগ নেয়া হয়, এবং সেপ্টেম্বর ১ থেকে নির্ধারিত চার্জের তুলনায় ক্ষেত্রবিশেষে ৩০ থেকে ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি করতে চাওয়া হয়েছিলো। বন্দর ব্যবহারকারীরা এর তীব্র আপত্তি জানালে দুপক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সমঝোতার চেষ্টা হয়, এবং বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত বর্ধিত চার্জ আদায় স্থগিতের নির্দেশ দেন, পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ও ট্যারিফ কমিটির অনুমোদন ছাড়া নতুন কোনও চার্জ আরোপের অনুমতি দেননি।
তবে তৃতীয় মাসে বিকডা ও ডিপো মালিকরা নতুন ফন্দি এঁটেছেন। তারা ঘোষণার আগে থেকেই ১১ ডিসেম্বর থেকে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে অফডকের মাশুল বাড়ানো হয়নি, কিন্তু পরিচালনায় খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। আদালতের নির্দেশ ও মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ব্যবসা চলতে না পারায় এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে রফতানি পণ্য, খালি কনটেইনার হ্যান্ডলিং বন্ধ হয়ে যাবে; তবে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার আনলোড করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, আইসিডি নীতিমালা অনুযায়ী, শিপার, কনসাইনি, এমএলও, শিপিং এজেন্ট ও ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়া একতরফাভাবে কোনও চার্জ নির্ধারণ করা যাবে না। ১১ ডিসেম্বর থেকে কাজ বন্ধ রাখার বিষয়ে বন্দরের প্রশাসনকে কোনও নোটিস দেয়া হয়নি।
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, বড় শিপিং লাইনসকে কনটেইনার না পাঠাতে বলার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিজিএমইএ-এর সহসভাপতি রফিক উদ্দিন চৌধুরী জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে তাদেরকে জানানো হয়নি, তাই প্রতিক্রিয়া নেয়া সম্ভব হয়নি।
অফডক কর্তৃপক্ষের এ হঠাৎ পদক্ষেপে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম স্থবির হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষত তৈরি পোশাক শিল্পসহ রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
সবার দেশ/কেএম




























