Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৭ মে ২০২৫

মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলা

হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, তিন আসামির খালাস

হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, তিন আসামির খালাস
ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় আট বছর বয়সী শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন শিশুটির বড় বোনের শ্বশুর হিটু শেখ। এছাড়া আসামি ছিলেন— বোনজামাই সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগম। আদালত হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তবে অপর তিন আসামি— সজীব, রাতুল ও রোকেয়াকে সন্দেহের সুবিধা দিয়ে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার তদন্ত শেষ করে গত ১৩ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এরপর ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয় এবং ২৭ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মোট ২৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। ঈদের ছুটি বাদ দিয়ে টানা ১২ কার্যদিবসে বিচারকাজ শেষ হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, হিটু শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সে সঙ্গে রয়েছে মেডিকেল প্রতিবেদন, ঘটনার পরিপার্শ্বিকতা ও প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের জবানবন্দি— যেগুলোর ভিত্তিতে হিটুর অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

মামলার প্রধান কৌঁসুলি বলেন, একটি নিষ্পাপ শিশুর উপর এ ধরনের নির্মম ও নৃশংস নির্যাতনের ঘটনায় সর্বোচ্চ সাজাই প্রত্যাশিত ছিলো। এ রায় নিঃসন্দেহে দেশে একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করবে।

মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং বাদীপক্ষের আইনজীবী জানান, বর্বর এ ঘটনাটি সারা দেশে চরম ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়। মাগুরার আইনজীবীরাও দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন।

মামলার ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী, গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশু আছিয়া। ৮ মার্চ শিশুটির মা আয়েশা আক্তার সদর থানায় চারজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন।

আছিয়াকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল ও পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হলে ১৩ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পরে ১৫ মার্চ হিটু শেখ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং জানায়, সে একাই এ অপরাধে জড়িত ছিলো।

১৩ এপ্রিল তদন্তকারী কর্মকর্তা, মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আলাউদ্দিন সরদার আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ৭ মে পর্যন্ত আট কার্যদিবসে শেষ হয়। এরপর ৮ মে আসামিদের ৩৪২ ধারায় জবান পরীক্ষা সম্পন্ন হয় এবং ১২ ও ১৩ মে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারিত হয় ১৭ মে।

সবার দেশ/কেএম