ট্যাক্স ছাড়া যে কয়টি মোবাইল ফোন আনতে পারবেন প্রবাসীরা
বৈধভাবে মোবাইল আমদানির শুল্কহার কমানোসহ প্রবাসীদের হাতে আনা মোবাইল ফোনের নিয়মে বড় পরিবর্তন আনছে সরকার। এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে ১ ডিসেম্বর সচিবালয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির যৌথ সভায়।
সভায় জানানো হয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)–রেজিস্ট্রেশন কার্ডধারী প্রবাসীরা এখন থেকে ট্যাক্স ছাড়ে মোট তিনটি মোবাইল ফোন দেশে আনতে পারবেন। অর্থাৎ নিজ ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের সঙ্গে অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন ফ্রিতে আনা যাবে। চতুর্থ ফোন থেকে শুল্ক দিতে হবে।
যাদের বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজ ব্যবহারের ফোনের বাইরে অতিরিক্ত একটি ফোন বিনা শুল্কে আনতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বৈধ ক্রয়রসিদ সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক—কারণ বিদেশে বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালান চক্র প্রবাসীদের চাপ দিয়ে অবৈধ পণ্য বহনে ব্যবহার করছে।
সভায় সাতটি মূল সিদ্ধান্ত
১. প্রবাসীদের মোবাইল রেজিস্ট্রেশন ছাড়: দেশে ছুটি কাটানোর সময় প্রবাসীরা ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হবে।
২. বিএমইটি কার্ডধারীদের জন্য তিনটি ফোন ফ্রি: কার্ডধারীরা ট্যাক্স ছাড়া তিনটি ফোন আনতে পারবেন। কার্ডবিহীনরা আনতে পারবেন দুটি—একটি ব্যক্তিগত ব্যবহার, একটি অতিরিক্ত।
৩. মোবাইল আমদানির শুল্ক কমানো: বৈধ আমদানি বাড়াতে স্মার্টফোনের শুল্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে শুল্কহার প্রায় ৬১ শতাংশ।
৪. স্থানীয় উৎপাদনের শুল্ক সমন্বয়: আমদানি শুল্ক কমানো হলে দেশের ১৩–১৪টি মোবাইল ফ্যাক্টরির শুল্ক ও ভ্যাটও কমাতে হবে—নয়তো বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে এনবিআর, বিটিআরসি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
৫. সিম রেজিস্ট্রেশন সতর্কতা: সাইবার অপরাধ বা অনলাইন প্রতারণা রোধে নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ক্লোন, চুরি/ছিনতাই হওয়া এবং রিফারবিশড মোবাইল আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হবে।
৬. ১৬ ডিসেম্বরের আগে স্টকফোন বৈধকরণ: অবৈধভাবে আমদানিকৃত হলেও যেসব ফোনে বৈধ আইএমইআই আছে, সেগুলো ১৬ ডিসেম্বরের আগে আইএমইআই তালিকা জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে বৈধ করা যাবে। তবে ক্লোন বা রিফারবিশড ফোন এ সুবিধা পাবে না।
৭. বর্তমান ফোন বন্ধ না হওয়ার নিশ্চয়তা: বর্তমানে সচল কোনো ফোনই ১৬ ডিসেম্বরের আগে বন্ধ করা হবে না। ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর চালু হবে; তাই ‘বৈধ আইএমইআইবিহীন ফোন বন্ধ’ সম্পর্কিত গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, পুরনো বিদেশি ফোনের ডাম্পিং, কেসিং বদলে চোরাচালান এবং রিফারবিশড ফোনের অবৈধ ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। ভারত, থাইল্যান্ড, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ফ্লাইট শনাক্ত করে কাস্টমসের অভিযান জোরদার করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী) ২০২৫–এ ই–কেওয়াইসি ও আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন ডেটা সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং তথ্য লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান যোগ করা হয়েছে।
সবার দেশ/এফএস




























