প্রতিশোধে প্রস্তুত পাকিস্তান
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শিশুসহ ৩ পাকিস্তানী নিহত

পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে অন্তত তিনটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে একজন শিশুসহ কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং আরও অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্র।
হামলাগুলো হয়েছে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ, কোটলি এবং পাঞ্জাবের আহমেদপুর ইস্ট এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, বিস্ফোরণগুলো এতটাই শক্তিশালী ছিলো যে বহু কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
এ হামলার পেছনে কারণ হিসেবে ভারত দাবি করছে, সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পাহেলগামে পর্যটকদের ওপর সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার জবাবেই তারা ‘সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোতে’ হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হন। ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করলেও ইসলামাবাদ তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’: ভারতের দাবি ও অবস্থান
ভারতের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের একটি সামরিক অভিযানের আওতায় পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মোট ৯টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।
এক বিবৃতিতে তারা বলেছে এ হামলা ছিলো অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত ও পরিকল্পিত। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর লজিস্টিক ও পরিকল্পনা ঘাঁটি লক্ষ্য করেই এটি চালানো হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোনও স্থাপনায় আঘাত হানা হয়নি।
সামরিক সূত্র আরও বলেছে, হামলার উদ্দেশ্য ছিলো ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা’, যা তারা হামলার পরপরই ‘জয় হিন্দ’ বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ করে।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া: প্রতিশোধ আসন্ন
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন,
এ আগ্রাসনের কঠিন জবাব দেয়া হবে। সময় ও স্থান আমরা নির্ধারণ করবো। ভারত জানুক, পাকিস্তানের আকাশ ও ভূমি রক্ষা করার পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
তিনি আরও জানান, হামলার ক্ষয়ক্ষতি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে, তবে প্রাথমিকভাবে একজন শিশু সহ তিনজন নিহত এবং আরও ১২ জনের আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও উত্তেজনার মূল্যায়ন
পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা উভয়পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এ ধরনের খোলাখুলি সংঘর্ষ গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অশনিসঙ্কেত।
দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এখন চরম পর্যায়ে। সীমান্তে সেনা মোতায়েন, আকাশপথে পাল্টা আক্রমণ এবং যুদ্ধোন্মত্ত বার্তা—সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তানকে নতুন এক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে। পরিস্থিতির কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপের ওপর।
সবার দেশ/কেএম