চাপে আইসিই
যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে রেকর্ড ২২০০ অভিবাসী গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনবিরোধী অভিযানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। একদিনেই রেকর্ডসংখ্যক ২২০০’রও বেশি অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে সংস্থাটি—যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে একক দিনে সর্বোচ্চ গ্রেফতার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গ্রেফতারের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ, আইসিই’র একটি অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে।
হোয়াইট হাউসের চাপেই গণগ্রেফতার?
খবরে উঠে এসেছে, হোয়াইট হাউসের সরাসরি চাপেই এই গ্রেফতার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে অভিবাসন ইস্যুতে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত হোয়াইট হাউসের নীতিনির্ধারণী উপ-প্রধান **স্টিফেন মিলার** সম্প্রতি আইসিই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন।
বৈঠকে তিনি বলেন— আইসিই প্রতিদিন অন্তত ৩০০০ অভিবাসী গ্রেফতার না করলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পদচ্যুত করা হবে। এনবিসি জানায়, বৈঠকে অংশ নেয়া দুই কর্মকর্তা এমন হুমকির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
‘আটকের বিকল্প’ প্রোগ্রামের অপব্যবহার?
গ্রেফতার হওয়া অভিবাসীদের অনেকেই ছিলেন আইসিই’র Alternative to Detention (ATD) প্রোগ্রামের আওতায়। এ প্রোগ্রামটি মূলত এমন অভিবাসীদের জন্য, যাদের জনসুরক্ষার জন্য হুমকি মনে করা হয় না। শর্তসাপেক্ষে তারা মুক্ত থাকেন, তবে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারির মধ্যে থাকতে হয়—যেমন অ্যাঙ্কল মনিটর, স্মার্টফোন অ্যাপ, জিওলোকেশন ট্র্যাকিং এবং আইসিই অফিসে নিয়মিত রিপোর্টিং।
কিন্তু এবার দেখা গেছে, ওই প্রোগ্রামে থাকা বহু অভিবাসীকেই পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই সাক্ষাতের জন্য ডাকা হয়, এবং সেখানে গিয়ে তারা গ্রেফতার হন। এটি বিশ্বাসভঙ্গ এবং আইনগত জটিলতা তৈরি করছে, বলছেন অভিবাসন আইনজীবীরা।
আইনি লড়াইয়ের আশঙ্কা
এ অভিযানের জেরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিবাসী সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে চরম আতঙ্ক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে এটিডি প্রোগ্রামের সুযোগে অভিবাসীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
নিউ ইয়র্কের অভিবাসন আইনজীবী রোজালিন্ড বলেন, এটি এক ধরনের ফাঁদ। সরকারের ওপর আস্থা রেখে যারা রিপোর্টিং করছিলেন, তারাই এখন সবচেয়ে বড় বিপদে।
নির্বাচন সামনে, অভিবাসন ইস্যু চরমে
আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে অভিবাসন ইস্যুটি আবার শীর্ষে তুলে এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের কড়া সমালোচনার মধ্যে রিপাবলিকান প্রশাসন এখন কঠোর অবস্থান নিচ্ছে—যার প্রমাণই যেন এ গণগ্রেফতার।
সবার দেশ/কেএম




























