ইকুয়েডরে কারাগারে নৃশংস দাঙ্গা, ৩১ বন্দির মৃত্যু
ইকুয়েডরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাচালা শহরের একটি কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় অন্তত ৩১ বন্দি নিহত হয়েছেন। রোববার (৯ নভেম্বর) সারাদিন ধরে চলা সংঘর্ষ ও সহিংসতার পর সোমবার (১০ নভেম্বর) দেশটির কর্তৃপক্ষ হতাহতের এ তথ্য নিশ্চিত করে।
ইকুয়েডরের কারা প্রশাসন সংস্থা এসএনএআই জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে শ্বাসরোধ বা ফাঁসিতে ঝুলে। একই কারাগারে আরও একটি পৃথক ঘটনায় চার বন্দির মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি, যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষ অভিযান চালায়। দীর্ঘ সময় ধরে বন্দিদের মধ্যে চলা সংঘর্ষের পর পুলিশ পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সক্ষম হয় বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি কারাগারটিতে নতুন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় বন্দিদের স্থানান্তর ও তাদের আবাসন পরিবর্তনকে কেন্দ্র করেই এ দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে।
গত কয়েক বছর ধরে ইকুয়েডরের বিভিন্ন কারাগারে এমন দাঙ্গা প্রায় নিয়মিত হয়ে উঠেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী অপরাধী গ্যাংগুলোর আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণের লড়াই থেকেই এসব সহিংসতার জন্ম—এমনটাই মনে করছে দেশটির সরকার।
অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থান নেওয়া প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া এর আগেও ঘোষণা দিয়েছিলেন, কারাগারের ভেতরে গ্যাংনেতাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। তবে সমালোচকরা বলছেন, সরকারের ‘লোহিত নীতি’ই উল্টো কারাগারগুলোর ভেতরে সহিংসতা আরও তীব্র করেছে।
গত সেপ্টেম্বরে একই কারাগারে সংঘর্ষে ১৪ বন্দি নিহত ও আরও ১৪ জন আহত হয়েছিলেন। এরপর অক্টোবরে কলম্বিয়া সীমান্তবর্তী এসমেরালডাস শহরের আরেকটি কারাগারে দাঙ্গায় প্রাণ হারান ১৭ বন্দি।
সর্বশেষ এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দাঙ্গার সময় কারাগারের ভেতর থেকে গুলির শব্দ, বিস্ফোরণ আর সাহায্যের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল—যা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলতে থাকে।
ইকুয়েডরের মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি বন্দি থাকায় এমন সহিংসতা প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
সবার দেশ/কেএম




























