গোপনে থাইল্যান্ডে পাড়ি, জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে সরকার
লুঙ্গি গেঞ্জি পরে বিমানবন্দরে আবদুল হামিদ, পালান লাল পাসপোর্টে

লুঙ্গি, গেঞ্জি আর মুখে মাস্ক পরে গভীর রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গোপনীয়তার চাদরে ঢাকা এ সফরে তিনি থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে দেশ ত্যাগ করেন।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ ফ্লাইটে ব্যাঙ্ককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। তার সঙ্গে পরে বিমানে ওঠেন ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ডা. এনএম নওশাদ খান।
বিশেষ কূটনৈতিক লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করেই দেশ ছাড়েন আবদুল হামিদ। ওই পাসপোর্টটি তার রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি ইস্যু হয়, যার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত। শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট ইতোমধ্যে বাতিল হলেও, তার পাসপোর্ট বহাল থাকায় প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সমাবেশে বলেন, আবদুল হামিদ ফ্যাসিবাদের প্রতীক। তার পাসপোর্ট বাতিল না হওয়া আর নির্বিঘ্নে দেশত্যাগ প্রমাণ করে, এখনও রাষ্ট্রযন্ত্রে ফ্যাসিবাদের রেশ রয়ে গেছে।
তবে পাসপোর্ট অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতিরা আমৃত্যু বিচারপতির মর্যাদা ভোগ করেন, পাসপোর্ট আইনে এদের জন্য স্পষ্ট কিছু বলা নেই।
দেশত্যাগে সরাসরি বাধা না থাকায়, পুলিশ বা ইমিগ্রেশন কোনও আপত্তি করেনি বলে জানিয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) কর্মকর্তারা।
তবে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে সরকার। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখায় কর্মরত এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও আরও দুই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।
এছাড়া গঠিত হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি, যারা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সবার দেশ/কেএম