সীমান্তজুড়ে ফের পুশইনের চেষ্টা ভারতের
চাপ বাড়ছে সীমান্তে। সীমান্তের ওপারে ৩০০ জনকে জড়ো করেছে বিএসএফ। সাতক্ষীরায় পুশইন করা ৭৮ জনের মধ্যে তিন জন ভারতীয়। বিজিবির প্রতিবাদ, পতাকা বৈঠকের আহ্বান।

সীমান্তে আবারও পুশইন পরিস্থিতি তৈরি করেছে ভারত। খাগড়াছড়ি ও সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফ অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, হয়েছে পতাকা বৈঠকের আহ্বানও।
সাতক্ষীরায় ৭৮ জনকে ফেলে গেল বিএসএফ
সাতক্ষীরার সুন্দরবনের পাশের মান্দারমনি এলাকায় রোববার (১১ মে) রাতে ৭৮ জনকে ফেলে রেখে যায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরা। পরে কোস্ট গার্ড ও বন বিভাগের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়। এদের মধ্যে তিনজন ভারতীয় নাগরিক, যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই।
অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ
পুশইন হওয়া ব্যক্তিরা জানায়, তারা ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাট এলাকার বস্তিতে বহু বছর ধরে বাস করছিলেন। ২৬ এপ্রিল হঠাৎ করে তাদের চোখ বেঁধে বিমানে ও পরে ট্রাকে করে এনে সুন্দরবনের একটি চরে ফেলে যায় বিএসএফ। অনেকেই বলছেন, তারা ৩০-৩৭ বছর ধরে ভারতে ছিলেন, অনেকের পরিবার এখনো ভারতের ভেতরেই রয়ে গেছে।
বিজিবির তৎপরতা ও প্রতিবাদ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী জানান, গত ৭ থেকে ৯ মে পর্যন্ত ২৮০ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ। এর মধ্যে রোহিঙ্গাও রয়েছে। এসব পুশইন হয়েছে খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, কুড়িগ্রাম, রৌমারী এবং সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
বিপাকে প্রশাসন, উদ্বেগে স্থানীয়রা
এমন পরিস্থিতিতে বিজিবি সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছে। পাশাপাশি ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে একাধিকবার পতাকা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। তবে স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসনের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পুশইনের কারণে সীমান্ত এলাকায় জননিরাপত্তা ও মানবিক সঙ্কট তৈরি হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত তথ্যসূত্র:
- পুশইন সংখ্যা (৭-৯ মে): ২৮০ জন
- সাতক্ষীরায় উদ্ধার: ৭৮ জন
- ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত: ৩ জন
- পুশইনের প্রধান এলাকা: খাগড়াছড়ি, সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার
- বিজিবির পদক্ষেপ: নজরদারি, পতাকা বৈঠক, প্রতিবাদ
সীমান্তে এ ধরনের পুশইন কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শরণার্থীদের ফিরিয়ে দেয়া বা এভাবে ঠেলে দেয়ার কোনও বৈধতা নেই। দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে সীমান্ত পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে।
সবার দেশ/কেএম