Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:৩৮, ৫ জুন ২০২৫

শিষ্টাচার নাকি রাজনৈতিক বার্তা?

খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাড়ির নামজারির কাগজ হস্তান্তর

খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাড়ির নামজারির কাগজ হস্তান্তর
ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাড়ির নামজারির কাগজ হস্তান্তর করেছে সরকার। এ কাগজপত্র বুধবার (৪ জুন) রাতে তার হাতে তুলে দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম এবং রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম।

বিষয়টি আপাতদৃষ্টিতে প্রশাসনিক কার্যক্রমের অংশ মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে একাধিক রাজনৈতিক ইঙ্গিত ও প্রশ্ন। কারণ, সরকার ও খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সম্পর্ক অতীতেও ছিল সংঘাতপূর্ণ। বিশেষ করে সেনানিবাসের বাড়ি প্রত্যাহারের ঘটনাটি এখনো বিএনপির রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষোভের বিষয়।

শিষ্টাচার, স্বাস্থ্য খোঁজ, না রাজনৈতিক সফট সিগনাল?

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলছেন, এটি ছিলো ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’। তিনি জানেন না কাগজপত্রের প্রকৃতি কী। আবার বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান দাবি করছেন, তারা এসেছিলেন চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য জানতে এবং ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে। অথচ গৃহায়ন উপদেষ্টা একজন টেকনোক্র্যাট কর্মকর্তা হলেও এমন সময় এবং ঘরোয়া পরিসরে বিরোধী দলীয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ একটি বার্তা বয়ে আনে—বিশেষ করে যখন দেশে রাজনৈতিক উত্তাপ বিরাজ করছে।

সরকারি বরাদ্দ ও বিতর্কিত ইতিহাস

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে গুলশানে একটি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়। সেটার নিকটেই তিনি সেখানে ‘ফিরোজা’ নামের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। এছাড়াও সেনানিবাসে আরেকটি বাড়ি তাকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো, যা ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে প্রেসিডেন্ট জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ী থেকে উৎখাত করে। তার দীর্ঘদিনের সংসারের সব মালামাল ফেলে রেখে এক কাপড়ে তাঁকে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার বাতিল করে দেয় সে বাড়ির বরাদ্ধ। সে সময় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক হয় এবং এটি খালেদা জিয়াকে সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়।

হস্তান্তরের সময় ও প্রেক্ষাপট

এ হস্তান্তর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন—

  • বিএনপির সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের অবনতির দিকে গড়াচ্ছে।
  • দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনে অনিশ্চয়তা।
  • আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি এবং রাজনৈতিক সমঝোতার আবহ সৃষ্টি হচ্ছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ির মালিকানা বা নামজারি নিশ্চিত করার পদক্ষেপকে অনেকে রাজনৈতিক সফটনার হিসেবে দেখছেন। এটি হয়তো একদিকে মানবিক বার্তা, অন্যদিকে আস্থার পরিবেশ তৈরির একটি কৌশল।

এক গৃহায়ন উপদেষ্টার ভূমিকাই সব নয়

উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, যার অতীত পরিচিতি মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার'-এর সঙ্গে যুক্ত, তিনি সরকারি উচ্চপর্যায়ের একজন পরামর্শক হিসেবে এমন সাক্ষাতে যাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—সরকার কি খালেদা জিয়াকে বার্তা দিচ্ছে? নাকি এটি পর্দার আড়ালে কোনো বড় সমঝোতার সূচনা?

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গুলশানের বাড়ির কাগজ হস্তান্তর নিঃসন্দেহে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। যদিও এটিকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলা হচ্ছে, তবু এর ভেতরে রয়েছে রাজনীতির সূক্ষ্ম ইঙ্গিত—যা হয়তো আরও কিছুদিন পরেই স্পষ্ট হবে।

এ নামজারির কাগজ কেবল একটি বাড়ির মালিকানা নয়, বরং সম্ভবত একটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমীকরণের শুরু—যেখানে খালেদা জিয়ার প্রতি আচরণে নমনীয়তা প্রদর্শন নতুন আলোচনার দ্বার খুলে দিচ্ছে।

সবার দেশ/কেএম

শীর্ষ সংবাদ:

রাজধানীর বাড্ডায় যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ
আনিস আলমগীরকে ছেড়ে দিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও-কঠোর হুঁশিয়ারি জুলাই ঐক্যের
হাদির কিছু হলে সেদিনই সরকারের শেষদিন হবে-কঠোর হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের
খালেদা জিয়ার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল
জকসু নির্বাচনে ভিপি পদসহ ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার
তফসিল ঘোষণার পর লালমনিরহাট জুড়ে উৎসবের আমেজ
নোয়াখালীতে গাছ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
ফুলে ভরেছে যশোরের গদখালী, চাষিদের মুখে ফের হাসি
ভারতীয় আগ্রাসন ও আওয়ামী ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে সোমবার রাজধানীতে সর্বদলীয় প্রতিরোধের ডাক
হাদির হামলাকারীদের আশ্রয় দিলে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ: হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের
প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে জাতিসংঘ মহাসচিবের শোক
বেনাপোল রেলপথে পণ্য আমদানিতে ধস
সিঙ্গাপুরে নেয়া হচ্ছে হাদিকে, প্রস্তুত এয়ার অ্যাম্বুলেন্স