স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগে নতুন জি-টু-জি ব্যবস্থা প্রস্তাব
বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে সুখবর দিলো সৌদি
নার্স, ডাক্তার ও কেয়ারগিভার পাঠাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা–রিয়াদে আলোচনায় অগ্রগতি
বাংলাদেশি ডাক্তার, নার্স, কেয়ারগিভার, টেকনিশিয়ানসহ স্বাস্থ্যখাতের দক্ষ কর্মী সৌদি আরবে সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি) নিয়োগের জন্য নতুন একটি প্রাতিষ্ঠানিক ফ্রেমওয়ার্ক প্রস্তাব করা হয়েছে। রিয়াদে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া এবং সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্র্যাক্টিং ও বিদেশি অফিসবিষয়ক মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ বিন হাসান আল-দুগাইসারের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রোববার (২৩ নভেম্বর) বাসস বৈঠকের তথ্য প্রকাশ করে।
সরকারি নথি অনুযায়ী জানা যায়, ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়ার সাম্প্রতিক সৌদি সফরকালে উভয় পক্ষ স্বাস্থ্যখাতে কর্মী নিয়োগকে আরও সহজ, দ্রুত ও প্রাতিষ্ঠানিক করার বিষয়ে একমত হয়। আলোচনায় ২০২৪-২৫ সালে এক হাজার ২০০ জন বাংলাদেশি গ্র্যাজুয়েট নার্স নিয়োগের বিষয়টি প্রশংসিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সৌদি আরবে কর্মরত নার্সদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও সেবার মান সম্পর্কে সৌদি সরকারের মতামত প্রয়োজন, যাতে প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি আরও উন্নত করা যায়।
যোগ্য নার্সদের বেসরকারি খাতে নিয়োগ সহজ করতে বাংলাদেশ নার্সদের জন্য প্রোমেট্রিক পরীক্ষার ছাড় বা বিকল্প ব্যবস্থা প্রস্তাব করে। পাশাপাশি সৌদি সরকারি হাসপাতালগুলোর মতো নিয়োগ মডেল চালু করার অনুরোধ জানানো হয়।
বাংলাদেশ আরও জানায়, সৌদি কমিশন ফর হেলথ স্পেশালটিজ (এসসিএফএইচএস)-এর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চাই, যাতে মূল্যায়ন, লাইসেন্সিং এবং প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া সহজ হয়। এজন্য সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন এবং পাঠ্যক্রম সমন্বয়ের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
সৌদি পক্ষ জানায়, স্বাস্থ্য খাতে রূপান্তর প্রক্রিয়া শুরুর আগে উভয় দেশ একটি খসড়া নিয়োগ চুক্তি চূড়ান্ত করেছিল। নতুন পরিবর্তিত নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওই চুক্তি সংশোধন করা যেতে পারে।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, সৌদিতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার নার্সের উল্লেখযোগ্য চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশি নার্সরা সাধারণ ওয়ার্ডে টেকনিক্যাল নার্স হিসেবে সুপারভাইজিং নার্সের অধীনে কাজ করছেন।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন আর তাদের মন্ত্রণালয় সরাসরি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে না। নিয়োগের দায়িত্ব এখন হেলথ হোল্ডিং কোম্পানির (এইচএইচসি) হাতে।
নার্স নিয়োগে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই প্রোমেট্রিক পরীক্ষা, পেশাগত অভিজ্ঞতা, সৌদি হেলথ কাউন্সিলের পেশাগত যোগ্যতার স্বীকৃতি, সৌদি লাইসেন্স এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কাভার করার জন্য বাধ্যতামূলক বীমা—এসব শর্ত বজায় থাকবে বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশ–সৌদি আরবের এই সহযোগিতা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম জনশক্তির গন্তব্যে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সবার দেশ/কেএম




























