Sobar Desh | সবার দেশ সবার দেশ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:১৭, ৮ অক্টোবর ২০২৫

কর্মসংস্থান সংকট টেকসই প্রবৃদ্ধির বাধা

রফতানি ও রেমিট্যান্সে ভর করে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে: বিশ্বব্যাংক

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও কর্মসংস্থান, নারীর অংশগ্রহণ ও সামাজিক বৈষম্য কমানোর ওপর জোর না দিলে এ প্রবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই হবে না।

রফতানি ও রেমিট্যান্সে ভর করে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে: বিশ্বব্যাংক
ফাইল ছবি

গত অর্থবছরের (২০২৪–২৫) প্রথম ছয় মাসের বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। জোরালো রফতানি আয়, ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থান সংকট

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা পরের অর্থবছরে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, কর্মসংস্থান সংকোচন, দারিদ্র্য বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি প্রবৃদ্ধির দীর্ঘমেয়াদী বাধা হতে পারে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২১ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে। কর্মসংস্থান-জনসংখ্যা অনুপাত কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশে, আর বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি ও বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও আগস্টে এটি ছিলো ৮ দশমিক ৩ শতাংশ, যা এখনও উচ্চ। বিনিয়োগ স্থবিরতা, দুর্বল ব্যাংক খাত, খেলাপি ঋণ এবং রাজস্ব আদায়ে দুর্বলতা দেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। বিশেষ উদ্বেগ কর্মসংস্থান সংকটে। বর্তমানে ৩০ লাখ কর্মক্ষম মানুষ শ্রমবাজারের বাইরে রয়েছেন, যার মধ্যে ২৪ লাখ নারী।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বড় ধাক্কার কারণে জিডিপি সামান্য কমে ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বিনিয়োগ স্থবিরতা, উচ্চ সুদের হার এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে, ফলে নতুন প্রকল্প ও মূলধনি ব্যয় স্থগিত হয়েছে।

শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি, কিন্তু চাকরির সংকট

শিল্প ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি থাকলেও নতুন চাকরি সৃষ্টি হচ্ছে না। গড়ে চাকরি ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে, যার মধ্যে সেবা খাতেই সবচেয়ে বেশি পতন। তৈরি পোশাক খাত রফতানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখলেও কর্মসংস্থানের সংকট দূর করতে তা যথেষ্ট নয়।

ব্যাংক খাত ও রাজস্ব সংকট

২০২৫ সালের মার্চে ব্যাংক খাতে অকার্যকর ঋণ (এনপিএল) বেড়ে ২৪ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার গড় ৭ দশমিক ৯ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। পাশাপাশি মূলধন-ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ অনুপাত (সিআরএআর) নেমে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ন্যূনতম ১০ শতাংশের মানদণ্ডের নিচে।

রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য সরকারের উদ্যোগ সত্ত্বেও ঘাটতি বেড়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছেছে।

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও পরামর্শ

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভাগীয় পরিচালক জ্যঁ পেম বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধি ও ভালো কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সাহসী সংস্কার ও দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। বিশেষ করে রাজস্ব আয় বাড়ানো, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করা, জ্বালানি ভর্তুকি কমানো, নগরায়ণ পরিকল্পনা শক্ত করা এবং বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও কর্মসংস্থান, নারীর অংশগ্রহণ ও সামাজিক বৈষম্য কমানোর ওপর জোর না দিলে এ প্রবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই হবে না।

সবার দেশ/কেএম

শীর্ষ সংবাদ:

পাঁচ অস্ত্রসহ গ্রেফতার লিটন গাজী সম্পর্কে সব জানালো পুলিশ সুপার
আনসার ভিডিপি ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যবস্থাপক গ্রেফতার
লালমনিরহাটে স্বামী হত্যা মামলায় স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
ভোলাহাটে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কলেজ শিক্ষকের মৃত্যু
সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দালাল চক্রের খপ্পরে
বাংলাদেশ সীমান্তে পঁচছে ৩০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ
সুদের টাকার জন্য নোয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার-১
ইমরান খান বেঁচে আছেন, দেশ ছাড়তে চাপ: পিটিআই
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের প্লট দুর্নীতি মামলার রায় আজ
শুরু হলো বিজয়ের মাস
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত
খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে হাসপাতালে জামায়াত সেক্রেটারি
স্কুল ভর্তির লটারি ১১ ডিসেম্বর
বিডিআরকে দুর্বল করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাতেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড
ছয় উপসচিবের দফতর পরিবর্তন