অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, শ্বাসরোধের চেষ্টারও প্রমাণ
বিচারকের ছেলের মৃত্যু ধারালো অস্ত্রের আঘাতে: চিকিৎসক
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৯) নিহত হওয়ার ঘটনায় ময়নাতদন্তে বেরিয়ে এসেছে নৃশংস হামলার চিত্র। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একাধিক স্থানে রক্তনালিসহ গুরুত্বপূর্ণ টিস্যু কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তরুণ তাওসিফের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি শ্বাসরোধের চেষ্টারও আলামত পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে তাওসিফের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত পরিচালনা করেন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন এবং প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। প্রায় ৩০ মিনিটের এ প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দুপুরে জামালপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফনের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।
এ সময় হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন নিহতের বাবা বিচারক আব্দুর রহমান। পরিবারের সদস্যদের শোকের ছায়া আরও গভীর হয় ময়নাতদন্তের বর্ণনায়।
ধারালো অস্ত্রে একাধিক আঘাত, কেটে গেছে রক্তনালী
ময়নাতদন্ত শেষে ডা. কফিল উদ্দিন জানান, তাওসিফের ডান উরু, ডান পা ও ডান বাহুতে ধারালো ও চোখা অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এসব আঘাতে একাধিক স্থানে রক্তনালী কেটে যায়। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই তার মৃত্যুর প্রধান কারণ।
তিনি জানান, গলায় কালশিটের দাগ পাওয়া গেছে, যা নরম কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধের প্রচেষ্টায় হয়ে থাকতে পারে। তবে এটি মৃত্যুর ‘সেকেন্ডারি ফ্যাক্টর’, আঘাতের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম প্রভাবশালী। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও শ্বাসরোধের চেষ্টা একই সময়ে ঘটানো হয়েছিলো।
মামলা প্রক্রিয়াধীন, হামলাকারী হাসপাতালে পুলিশের নজরদারিতে: ওসি
ঘটনার এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজপাড়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। হামলাকারী লিমন মিয়া বর্তমানে পুলিশ নজরদারিতে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পটভূমি: ভাড়া বাসায় হামলা, আহত তাওসিফের মা
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হামলার সময় নিহত তাওসিফের মা তাসমিন নাহার লুসীও আহত হন। তিনি বর্তমানে রামেকে চিকিৎসাধীন এবং অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক শংকর কুমার বিশ্বাস। একই ঘটনায় হামলাকারী লিমন মিয়াও ধস্তাধস্তির সময় আহত হন এবং তাকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বিচারক পরিবারের এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে রাজশাহীতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া এগোনোর অপেক্ষায় পরিবার ও স্থানীয়রা।
সবার দেশ/কেএম




























