মার্কিন রাজনীতি-প্রশাসনে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীদের সাফল্য যেনো এক অনন্য অধ্যায় রচনা করেছে প্রবাসী ইতিহাসে। এক সিটির মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনর্নির্বাচন, একজনের সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি পদে জয় এবং ১৫ বাংলাদেশি কাউন্সিলম্যানের নির্বাচিত হওয়া—সব মিলিয়ে বাংলাদেশিদের জন্য এটি এক গর্বের মুহূর্ত।

সবচেয়ে আলোচিত নাম ফিলাডেলফিয়া সংলগ্ন মিলবোর্ন সিটির মেয়র মাহাবুবুল আলম তৈয়ব (৪৭)। কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই তিনি পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন, যা স্থানীয় প্রশাসনে বাংলাদেশিদের প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে মিশিগান স্টেটের হ্যামট্রমিক সিটিতে মেয়র পদে বাংলাদেশি প্রার্থী মুহিত মাহমুদ মাত্র ১১ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেও সান্ত্বনা হিসেবে এ সিটির দুই বাংলাদেশি কাউন্সিলম্যানের জয় আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছে প্রবাসী মহলে।

নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান সোমা সাঈদ—যা যুক্তরাষ্ট্রে বিচারবিভাগীয় অঙ্গনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের শক্ত অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে।

৪ নভেম্বরের নির্বাচনে হাডসন সিটি, আপার ডারবি টাউনশিপ ও মিলবোর্ন সিটিতে ডেমোক্র্যাটদের বিপুল বিজয়ে বাংলাদেশি সম্প্রদায়েরও জয়জয়কার দেখা গেছে। পরদিন ৫ নভেম্বর প্রবাসী অধ্যুষিত এসব এলাকায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে বিজয় উদযাপন করা হয়।

মিলবোর্ন সিটিতে কাউন্সিলম্যান হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রামের পতেঙ্গার সায়েদ রিয়াদ (২১) এবং নওগাঁর শাহিন আলম (৩৫)।

সংলগ্ন আপার ডারবি টাউনশিপেও বাংলাদেশি প্রার্থীদের জয়গান—কাউন্সিলওম্যান পদে সায়মা দিশা, ট্রেজার পদে মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান ড্যানি, এবং স্কুল বোর্ড ডিরেক্টর পদে মোহাম্মদ হোসেন মিঠু বিজয়ী হয়েছেন।

মিশিগানের হ্যামট্রমিক সিটিতে সর্বাধিক ভোট পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন আবু আহমদ মুসা, একইসঙ্গে কাউন্সিলম্যান পদে জয় পেয়েছেন নাইম চৌধুরী।

নিউজার্সির আটলান্টিক সিটিতে ‘কাউন্সিল অ্যাট লার্জ’ পদে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার সন্তান সোহেল আহমদ। পাশাপাশি স্কুল বোর্ড নির্বাচনে সুব্রত চৌধুরী তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়ে প্রথম এশিয়ান-আমেরিকান হিসেবে হ্যাটট্রিক বিজয়ের কীর্তি গড়েছেন।

জর্জিয়া স্টেটের আটলান্টা সংলগ্ন ডোরাভিলে সিটিতে কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো. নাসের।

নিউইয়র্ক স্টেটের হাডসন সিটিতে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন কাউন্সিলম্যান দেওয়ান সরোয়ার ও মোহাম্মদ রনি, আর সুপারভাইজার পদে আবারও জয় পেয়েছেন আবদুস মিয়া।

সবমিলিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রশাসনে বাংলাদেশিদের এ উত্থান শুধু প্রবাসী সমাজের নয়, গোটা জাতির জন্যই এক গর্বের অর্জন—যা ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকার সম্ভাবনা জাগাচ্ছে।

সবার দেশ/কেএম