জেন জি বিক্ষোভে উত্তাল মরক্কো
মাদাগাস্কারের পর এবার উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোয় টানা চতুর্থ দিনের মতো তরুণদের বিক্ষোভ চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এ আন্দোলন ধীরে ধীরে সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেও বিভিন্ন শহরে সংঘর্ষ হয়।
দেশটির শত শত তরুণ রাস্তায় নেমে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি কমানোর দাবি জানায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে পাথর নিক্ষেপ করেছে। বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গেছে, গাড়ি ও ব্যাংকে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
মরক্কোর মানবাধিকার সংগঠন এএমডিএইচ অভিযোগ করেছে, নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে গ্রেফতার করছে এবং অনেককে শারীরিক নির্যাতন করেছে। ওউজদা শহরে এক বিক্ষোভকারী পুলিশ গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ম্যাপ জানিয়েছে।
এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ‘জেন জি ২১২’ নামে একটি যুব সংগঠন। তারা স্বীকার করেছে, কিছু জায়গায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে, তবে অংশগ্রহণকারীদের শান্তিপূর্ণ থাকতে আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটির ভাষায়—আমাদের ন্যায্য দাবির বৈধতাকে খাটো করবে এমন আচরণ থেকে বিরত থাকুন।
বিক্ষোভে তরুণদের হাতে নানা প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। একজনের হাতে লেখা ছিলো: ‘অন্তত ফিফা স্টেডিয়ামে ফার্স্ট এইড কিট থাকবে! আমাদের হাসপাতালে তো সেটাও নেই।’ মূলত মরক্কোতে ২০৩০ ফিফা বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণে বিপুল অর্থ ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েই তরুণরা ক্ষুব্ধ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ তরুণ-অভ্যুত্থান এশিয়া ও আফ্রিকার সাম্প্রতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা। নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও মাদাগাস্কারে সম্প্রতি জেন জি প্রজন্ম নেতৃত্ব দিয়েছে এমন বিক্ষোভে। নেপালে এর জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হয়, আর মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট সোমবার সরকার ভেঙে দেন।
মরক্কোয় এখন পর্যন্ত অনেক বিক্ষোভকারী গ্রেফতার হলেও তাদের বেশিরভাগকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে এখনও ৩৭ জন তরুণের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে এএমডিএইচ।
সরকারি জোট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুবকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী এবং সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজতে চায়। একই সঙ্গে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর ‘আইনসঙ্গত ও ভারসাম্যপূর্ণ ভূমিকা’র প্রশংসা করেছে।
সূত্র: বিবিসি
সবার দেশ/কেএম




























