সীমান্তে নতুন উত্তেজনা
ভারতীয়দের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হচ্ছে: মমতা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। তিনি এ ঘটনাকে ‘বাড়াবাড়ি’ উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানান।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) কোচবিহারে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে মমতা বলেন, সীমান্ত এলাকায় ভাষাগত পরিচয়কে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, কেউ বাংলা বললেই বাংলাদেশি—এ ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, আর পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য—দুইয়ের পরিচয় এক করা বিপজ্জনক ভুল।
মমতা বলেন, উত্তর প্রদেশে বহু মানুষ উর্দু ভাষায় কথা বলেন, পাকিস্তানেও উর্দু বলা হয়—তাতে কোনও ভারতীয়কে পাকিস্তানি বলা হয় না। পাকিস্তানে যেমন পাঞ্জাব আছে, তেমনি ভারতে পাঞ্জাব আছে, আর দুই দেশের বাসিন্দারাই পাঞ্জাবি ভাষায় কথা বলেন। একইভাবে বাংলার বাসিন্দাদেরও ভাষাগত পরিচয়ের ভিত্তিতে টার্গেট করা হচ্ছে।
তিনি রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, সীমান্ত এলাকায় তল্লাশি ও নজরদারি জোরদার করতে হবে। পুলিশ যেনো ভয় না পেয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এবং কোনো অবৈধ চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে।
অন্য রাজ্যের কোনও সংস্থা পশ্চিমবঙ্গে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যদি কারও নাম কোনও মামলায় থাকে, তবে তদন্ত সম্পন্ন হবে, কিন্তু অনুমতি ছাড়া অন্য রাজ্যের বাহিনী এসে কাউকে ধরে নিয়ে যেতে পারে না। সম্প্রতি আসাম থেকে কয়েকজনকে ‘বিদেশি আইন’-এর নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো; মমতা এটিকে বেআইনি নজির হিসেবে উল্লেখ করেন।
ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন অনিয়ম নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তার অভিযোগ—অনেক বৈধ নাগরিকের নাম বাদ পড়ছে, বিবাহসূত্রে বাইরে যাওয়া নারীদের নাম তালিকায় যাচ্ছে না, আর পরিযায়ী শ্রমিকদেরও ঠিকমতো অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। তিনি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন—একজন বৈধ নাগরিকের নামও যেন বাদ না যায়।
উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার আগে কোলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় লোকসভায় ‘বন্দে মাতরম’ বিতর্কে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, বঙ্কিমচন্দ্রকে ‘বঙ্কিমদা’ বলা নিয়ে যারা বিতর্ক তোলে, তারা দেশের ইতিহাস জানে না। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি নেতাজি, গান্ধীজি, রামমোহন রায়—কেউকেই সম্মান দেয় না এবং বাংলার ঐতিহাসিক অবদানকে খাটো করে দেখাতে চায়।
সবার দেশ/কেএম




























