Sobar Desh | সবার দেশ ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:৫২, ১৯ মে ২০২৫

আপডেট: ০০:৫৩, ১৯ মে ২০২৫

স্নায়ুযুদ্ধে পরাজয় সাফ ফুটবলে

হৃদয়ভাঙা টাইব্রেকারে শিরোপা হাতছাড়া টাইগারদের

হৃদয়ভাঙা টাইব্রেকারে শিরোপা হাতছাড়া টাইগারদের
ছবি: সংগৃহীত

টাইব্রেকার—ফুটবলের এমন এক নির্মম অধ্যায়, যেখানে কখনো নায়ক হয়ে ওঠেন অচেনা কেউ, আবার নির্ভরতার প্রতীকও ভেঙে পড়েন চাপের ভারে। আজ ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ইউপিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সে নির্মমতা অনুভব করল বাংলাদেশ।

শুরুর ধাক্কা, ফেরার চেষ্টা

ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ভারতের সিঙ্গামায়ুম শামির দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু সে ধাক্কায় দমে যায়নি গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। খেলায় ফিরতে তারা তৈরি করেছিল একের পর এক সুযোগ।

৪২ মিনিটে বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে বঞ্চিত হয় নিশ্চিত গোল থেকে। মিঠুর হেড পোস্টে লেগে ফিরে এলে রিফাত কাজী ফিরতি বলে জাল কাঁপান, কিন্তু রেফারি গোল বাতিল করেন ফাউলের অভিযোগে—যার কোনো স্পষ্ট প্রমাণ ছিলো না। ফুটবলবোদ্ধারা এটিকে ‘ক্রূরতম ভুল’ বলেই বিবেচনা করছেন।

সমতা, আশার আলো

দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নামা জয় আহমেদ ৬০ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে সমতায় ফেরান বাংলাদেশকে। ভারতের রক্ষণভাগ এটাই প্রথমবারের মতো পরাস্ত হলো এ টুর্নামেন্টে। ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারের ট্র্যাজেডি

টাইব্রেকারে প্রথম দিকে এগিয়ে ছিলো বাংলাদেশ। গোলকিপার ইসমাইল হোসেন ভারতের দ্বিতীয় শট ঠেকিয়ে দেন। স্বপ্নটা তখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছিলো। কিন্তু শেষ দুটি শটে সালাহ উদ্দিন ও অধিনায়ক নাজমুল হুদা গোল করতে ব্যর্থ হলে পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ভারতের খেলোয়াড়রা উল্লাসে মাতেন, আর বাংলাদেশি যুবারা মাঠে বসে কাঁদেন—চোখের জলে ভেসে যায় স্বপ্নের ট্রফি।

রেফারির সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন

এ ম্যাচে রেফারিং নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাতিল হওয়া গোল, অতিরিক্ত সময় চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত—সব মিলিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি ম্যাচটিকে। ধারাভাষ্যকারেরাও একমত হয়েছেন, রেফারির কিছু সিদ্ধান্ত ছিলো অস্বচ্ছ এবং পক্ষপাতমূলক বলেই মনে হয়েছে।

লড়াইটা ট্রফির বাইরেও

ম্যাচ হারলেও মোরশেদ, ইসমাইল, জয়, রিফাতদের লড়াই, একাগ্রতা ও মানসিক দৃঢ়তা বাংলাদেশের ফুটবলের ভবিষ্যতের আশা জাগায়। এ দলটি মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো, ভুটান ও নেপালকে হারিয়ে উঠে এসেছিল ফাইনালে। প্রতিটি ধাপে তারা দেখিয়েছে সংহতি, সাহস ও সংগ্রাম।

হ্যাঁ, ট্রফিটা ভারতের হাতে উঠেছে। কিন্তু বাংলার ছেলেরা জিতেছে মানুষের ভালোবাসা, জিতেছে ভবিষ্যতের জন্য আত্মবিশ্বাস। আজ তাদের চোখের জল দুঃখের হতে পারে, কিন্তু তাতে মিশে আছে আগামী দিনের বিজয়ের বীজ।

সবার দেশ/কেএম