সেবা বন্ধ, উদ্বিগ্ন এলজিআরডি মন্ত্রণালয়
চার দিন ধরে অচল নগর ভবন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সদর দফতর নগর ভবনের সামনে টানা চতুর্থ দিনের মতো রাজনৈতিক আন্দোলন চলছে। ফলে পুরো ভবনের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। নাগরিক সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়।
রোববার (১৮ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ জানায়, চলমান অচলাবস্থা আদালতের রায়ে প্রভাব ফেলার অপচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কারণ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি রিট মামলা বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ তৈরি করাকে আদালতের প্রতি অনাস্থা ও অবমাননার শামিল বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হাইকোর্টের চূড়ান্ত আদেশ পাওয়ার পর আইনগত নির্দেশনা ও দাফতারিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
নগর ভবনের এ অচলাবস্থার কেন্দ্রে রয়েছেন সদ্য নির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেন। তার শপথ গ্রহণ নিয়ে একাধিক আইনি জটিলতা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের পরপরই ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে, কিন্তু ওই গেজেটকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিতর্ক।
২৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ এক লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে নির্বাচন ও শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটে তিনি নির্বাচন কমিশনের গেজেট এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় চ্যালেঞ্জ করেন। সে সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে ইশরাককে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা দিতে এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের আগস্টে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন সংশোধনের মাধ্যমে মেয়র না থাকলে প্রশাসক নিয়োগের বিধান যুক্ত করা হয়। তার পরই তৎকালীন মেয়রকে অপসারণ করে সরকার ডিএসসিসিতে একজন প্রশাসক নিয়োগ দেয়।
এখন পর্যন্ত শপথ নিতে না পারা ইশরাক হোসেনের পক্ষের নেতাকর্মীরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১৫ মে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে, যাতে উল্লেখ করা হয়— নির্বাচনী আপিল না করার সিদ্ধান্ত, বিচারাধীন রিট এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে কোনো জটিলতা রয়েছে কি না, তা জানার প্রয়োজন রয়েছে।
সব মিলিয়ে ডিএসসিসির প্রশাসনিক ভবনের অচলাবস্থা চরমে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি কত দ্রুত স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনো সময়সীমা দিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সবার দেশ/কেএম