দিশেহারা ইসরায়েল
ইরানের ভয়াবহ হামলায় ধ্বংসস্তূপ তেল আবিব
তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত শান্তিপূর্ণ শহর রিশন লে-সিয়ন এখন রূপ নিয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শহরটির এক উপশহর চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোররাতে চালানো এ হামলার অভিঘাতে উল্টে গেছে গাড়ি, ভেঙে পড়েছে একাধিক বাড়িঘর। কমপক্ষে দুইজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, আহত বহু। ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছে উদ্ধারকর্মীরা।
রাস্তার ধারে ছড়িয়ে আছে বাঁকানো লোহার রড, কংক্রিটের বিশাল চাঁই আর চূর্ণবিচূর্ণ কাঠ। একাধিক স্থানে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে বাড়ছে আতঙ্ক। ভেঙে যাওয়া দেয়ালের পাশে পড়ে আছে শিশুর খেলনা, বই, স্কুলব্যাগ—সব যেন আগের জীবনের নীরব সাক্ষ্য।

চোখে জল নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা সকাল থেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে খুঁজে ফিরছেন বাঁচিয়ে রাখা স্মৃতি। কেউ নিজের ঘরের দরজার ভাঙা কাঠের টুকরো জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন, কেউ আবার উদ্ধার করছেন ধুলোমাখা পারিবারিক অ্যালবাম।
এক ব্যক্তি উদ্ধার করেছেন একটি অক্ষত তেলচিত্র—বোমার আঘাতেও যেটি যেন অলৌকিকভাবে রক্ষা পেয়েছে। কাঁধে সে চিত্র নিয়ে তিনি যখন ভাঙা রাস্তায় হাঁটছিলেন, তখন তাঁকে ঘিরে জমে উঠেছিলো এক নিঃশব্দ শোক।
এ দৃশ্য যেন এক হাহাকারের চিত্রনাট্য—বেঁচে থাকার সংগ্রাম, ভাঙা ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে শেষ সম্বলটুকু তুলে নেওয়ার চেষ্টা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ হামলা শুধু একটি সামরিক পাল্টাঘাত নয়, বরং এটি ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার এক ভয়াবহ মোড়, যা পুরো অঞ্চলে অনিশ্চয়তা ও মানবিক সংকট আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনো ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব দিতে পারেনি, তবে উদ্ধার কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। হামলার পর থেকে আকাশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গেল যে শান্তিপূর্ণ জীবনের প্রতিচ্ছবি, তা আর কখনো ফিরবে কি?
সবার দেশ/কেএম




























