ব্যর্থ আয়রন ডোম
ইরানি আক্রমনের তীব্রতায় দিশেহারা ইসরায়েল, নিহত ৮
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত রাতে ইরান ইসরাইলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিলো তেল আবিব ও হাইফা শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ নগর অঞ্চল। ইরান থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যেন বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে—এ হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরাইলে অন্তত ৮ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জরুরি সেবা সংস্থা এমডিএ।
হামলার ভয়াবহতায় ধ্বংস হয়ে গেছে বহু ভবন। বিশেষ করে তেল আবিবের উপকণ্ঠ বাট ইয়াম শহরের একটি বহুতল ভবন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। যদিও ইসরাইলের সরকারি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া সঠিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দিতে অপারগ, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও থেকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা স্পষ্ট হয়েছে।
এ হামলার পাল্টা জবাবে ইসরাইল ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক ও কৌশলগত স্থাপনায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ও তেল শোধনাগারগুলো। রাজধানীর শাহরান এলাকার একটি তেলের ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড দেখা দিয়েছে, যা এখন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কোর (আইআরজিসি)-এর শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে। এতে আইআরজিসির প্রধান হোসেইন সালামি, সেনাপ্রধান এবং আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে ইসরাইলি সূত্রগুলো দাবি করেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে, আহতের সংখ্যা ৮০০-র বেশি, যার মধ্যে রয়েছে অন্তত ২০টি শিশু।
উভয়পক্ষের হামলায় মধ্যপ্রাচ্যের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও জানিয়েছেন, তিনি ও পুতিন একমত হয়েছেন—এ যুদ্ধের একটি অবসান ঘটানো জরুরি।
তবে এ মুহূর্তে কূটনৈতিক আলোচনার পথও ক্রমেই বন্ধ হয়ে আসছে। আজ রোববার (১৫ জুন) ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নির্ধারিত পারমাণবিক কর্মসূচি বিষয়ক ষষ্ঠ দফা বৈঠক হবার কথা থাকলেও, ইরান তা বাতিল করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্পষ্ট করে বলেছেন, যখন ইসরাইল অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন কোনো সমঝোতা আলোচনা অর্থহীন।
মধ্যপ্রাচ্যে এ যুদ্ধের আগুন কতদূর ছড়াবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে আন্তর্জাতিক মহলে আশঙ্কা বাড়ছে, এটি কোনো বৃহৎ আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
সবার দেশ/কেএম




























